শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও পরিবহন ফি নেয়া বন্ধ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে সোমবার দুপুরে আয়োজিত এক ছাত্র সামবেশ থেকে এ আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এ সময় সাদ্দাম হোসেন শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে প্রসাশনের উদাসীনতাকে দায়ী করেন।
উদাসীনতা কাটিয়ে দ্রুত শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ও পরিবহণ ফি প্রত্যাহার, আবাসিক-অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীকে দ্রুততম সময়ে টিকার আওতায় নিয়ে আসার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশ থেকে মাদকমুক্ত ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক নিশ্চয়তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের রোডম্যাপ প্রণয়ন, মেডিক্যাল সেন্টারের আধুনিকায়ন ও করোনার চিকিৎসার সুব্যবস্থার দাবিও জানানো হয়।
সমাবেশে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফি নেয়া অব্যাহত রেখেছে। পরিবহণ সেবা ভোগ না করলেও ভর্তি হতে এসে শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা করে পরিবহন ফি।
‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ধিক্কার, আপনারা অভিভাবকসুলভ আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আপনাদের শিক্ষার্থীবান্ধব ভূমিকা ছাত্রসমাজের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অনতিবিলম্বে পরিবহন ও আবাসিক ফি নেয়া বন্ধ করবেন; যেন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে তাদের শিক্ষা পরিচালনা করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এসব ফি নেয়া বন্ধ না করেন তাহলে মনে করব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিকতা রং রুটে চলে গেছে।’
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘চীন থেকে পাওয়া টিকার উপহার প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের দেয়ার কথা বলছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রশাসনিক শৈথিল্যের কারণে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা টিকার আওতায় আসলেও এখন পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা টিকার আওতায় আসেনি।
‘প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি শিক্ষার্থীদের পবিত্র আমানত। অনতিবিলম্বে সকল প্রশাসনিক শৈথিল্য পরিহার করে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করুন।’
দ্রুততার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন ও মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিও আহ্বান জানান সাদ্দাম হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে হবে। কোনো ধরনের রাজনৈতিক ছত্রছায়া আমরা দেখতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে ছাত্রলীগ যুগপৎ ভূমিকা রাখবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাশের সভাপতিত্বে ছাত্র সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সনজিত বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মাদকসেবী ও দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় কেন্দ্র হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা প্রক্টরিয়াল টিম, পুলিশ বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাদের সাথে সমন্বয় করে ক্যাম্পাসের যেখানে যেখানে মাদকসেবন হয়, সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন।
‘কোথায় মাদকসেবন হয় আপনারা যদি তা না জানেন তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে খোঁজ নেন। আমরা আপনাদের খোঁজ দেব।’