বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কলিমুল্লাহর বিদায়ে আগরবাতি

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২১ ১৫:৫২

ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে কলিমুল্লাহর কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে রাখা হয় উল্টো করে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মাঠে আতশবাজি ও মিষ্টি বিতরণ করেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষে স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে কলিমুল্লাহর বিদায়ে ‘গণক্রন্দন’ কর্মসূচি পালন করা হয়।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবির) আলোচিত উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর মেয়াদের শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে আগরবাতি জ্বালিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে কলিমুল্লাহর কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে রাখা হয় উল্টো করে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মাঠে আতশবাজি ও মিষ্টি বিতরণ করেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষে স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে কলিমুল্লাহর বিদায়ে ‘গণক্রন্দন’ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর মেয়াদ শেষ হয় রোববার। ওই দিনও তিনি ক্যাম্পাসে যাননি। ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে রোববার রাত ১০টার দিকে অধ্যাপক কলিমুল্লাহ নতুন উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, ‘কলিমুল্লাহ স্যার থাকাকালীন আমরা শুধু রংপুরেই নয়, সারা দেশে সমালোচিত হয়েছি। তার আমলে আমরা ভয়াবহ সেশনজটে পড়েছিলাম। এক ইয়ারে মাত্র একটি ক্লাসেই পরীক্ষা দিয়েছি। সে কারণে আমরা এসব কর্মসূচি পালন করেছি।’

শরিফুল ইসলাম পিয়াস নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য থাকবেন, তিনি ক্যাম্পাসে থাকবেন। কিন্তু এই আশা যখন আমাদের পূর্ণ হলো না, তখন তো প্রতিবাদের ভাষা ভিন্ন হতে পারে। সেই জায়গা থেকে আমরা এটা করেছি।

‘সবাই যেন বুঝতে পারে একজন উপাচার্য যখন নিজের কাজে ব্যর্থ হন তখন শিক্ষার্থীদের জায়গাটা কেমন হতে পারে। শিক্ষার্থীরা কখনো খুশিতে এটা করে না বরং সার্কাজমের মাধ্যমে প্রতিবাদ করা যায় সেটা করেছি।’

বর্তমান উপাচার্য যেন তাদের মনের ভাষা বোঝেন, তাদের জন্য কাজ করেন সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

কেন্দ্রীয় মাঠে আতশবাজি ও মিষ্টি বিতরণ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বায়েজীদ আহমেদ বলেন, ‘সাবেক ভিসি যে সমস্ত অন্যায়, দুর্নীতি, অনিয়ম, নৈরাজ্য করেছেন,তা থেকে আমরা কিছুটা হলেও মুক্ত। তাই, আতশবাজি, আগরবাতি জ্বালিয়ে এই উৎসব করেছি।’

শিক্ষার্থী হিসেবে কেন এটা করতে গেলেন, জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী জানান, ‘একজন উপাচার্যের কাছে আমাদের অনেক শেখার আছে। শিক্ষার্থীর মঙ্গল হয় এমন কাজ তিনি করেননি। তাই তো এই অভিনব প্রতিবাদ।’

কলিমুল্লাহকে নিয়ে যত অভিযোগ

কলিমুল্লাহকে বেরোবির ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয় ২০১৭ সালের ১ জুন। সে হিসাবে চলতি বছরের ৩১ মে তার চার বছর মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু তিনি ২০১৭ সালের ১৪ জুন ক্যাম্পাসে যোগ দেয়ায় ২০২১ সালের ১৩ জুন ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নেন।

উপাচার্য কলিমুল্লাহর মেয়াদের চার বছর দায়িত্ব থাকা সময়ে কর্মচারী দিয়ে পরীক্ষা নেয়া, একটি ক্লাস নিয়েই কোর্স শেষ করা, রাত ৩টায় ক্লাস নেয়া, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে অনিয়ম, তার আমলে বিভিন্ন বিভাগে সেশনজট বৃদ্ধি, ভর্তি পরীক্ষার জালিয়াতি ধামাচাপা দেয়াসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে মেয়াদের পুরো সময় সমালোচিত ছিলেন তিনি।

নতুন উপাচার্য

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০২০ সালের এপ্রিলে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার হিসেবে যোগ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার সকাল ৮টার দিকে তিনি সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন। সেখান থেকে সরাসরি ক্যাম্পাসে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ। তাকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ। ছবি: নিউজবাংলা

পরে হাসিবুর রশীদ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। এই মহুর্তে আমাদের দাবি, ভিসি কলিমুল্লাহ যে চক্র রেখে গেছেন তা ভাঙতে হবে। আইন এবং নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে।

‘আমরা চাই সুন্দর সুষ্ঠুভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চলুক। শিক্ষার্থী সেশনজট মুক্ত থাকুক। একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হোক।’

উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি এরই মধ্যে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছি। এখন সব মিটিং ক্যাম্পাসে হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেব।’

এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের নানা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর