জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নীলদলের এক অংশের নতুন কমিটি দেয়ার পর নতুন করে নীলদলের দুটি অংশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
একাংশ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে অপরাংশের সদ্য সাবেক সভাপতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে ওই অংশের সমালোচনা করছেন।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন সভাপতি ও ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার নীলদলের এই কমিটিকে প্রত্যাখান করে বক্তব্য দিয়েছে অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া ও ড. মোস্তফা কামালের নেতৃত্বাধীন নীলদল।
এই প্রত্যাখানের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে এর সমালোচনা করেন নীলদলের (অপরাংশ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন।
অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের নীল দল নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মিথ্যাচার চলছে আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ৩০ লক্ষ শহীদের এবং বঙ্গবন্ধু রক্তের নাম করে এহেন মিথ্যাচার এবং ভণ্ডামি করার অধিকার কারো নাই। এই চিহ্নিত মহলটি ইতোপূর্বে সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দল করে, করতেই পারে আমিও দল করি। কিন্তু এটা নিয়ে তারা দলাদলি করে, গ্রুপিং করে। সারাদিন ভিসির রুমে দলে দলে শিক্ষকরা ঢুকে আর বের হয়। কারণটা কি? উপাচার্যের তো বলা উচিত আপনারা ক্লাসে যান, গবেষণা করেন, বই লিখেন, পিএইচডির জন্য বাইরে যান। এই দলাদলি করে তারা একটু সুবিধা নেয়, প্রক্টর হয়, মাসে কিছু পায়, দুটা প্যাকেট ফ্রি খায়। এটা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পড়েই না।’
নিউজবাংলাকে তিনি আরও বলেন, আমার কথা হলো উপাচার্যকে কেনো শিক্ষকরা ঘিরে থাকবেন। বিশেষ করে জুনিয়র শিক্ষকরা। এরা যে ভবিষ্যতে কী হবে আল্লাহই জানে।
‘এত তেলবাজ এরা, এরা ঢুকছেও ওইভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যা আছে এরা সিনিয়র হলে তাও থাকতে দিবে না। সিনিয়র শিক্ষকরা উপাচার্যের কাছে যেতে পারেন। মাঝেমধ্যে বুদ্ধিসু্দ্ধি লাগে। ভিসি এক-দুইজনকে ডাকতে পারেন। অনেকসময় একা পারা যায় না। কিন্তু এ কি অবস্থা? জগন্নাথ একটা রঙ্গমঞ্চ। আগের উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে রঙ্গমঞ্চ বানাই গেছে এখন ওইভাবে তারা নাচতেছে।’
এ বিষয়ে নীলদলের (একাংশ) সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিপক্ষে কে কী করছে এটা নিয়ে বিতর্ক করে তো লাভ নেই। সবাই জানে, আর তারা বলুক মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কে কী করছে। আর একজন অধ্যাপকের তো উচিত শালীনতার সঙ্গে কথা বলা। আমরা উনি কিংবা অন্য কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলতে চাই না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বর্তমান কমিটির মেয়াদ গত বছরের নভেম্বরে শেষ হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে নভেম্বরে অনলাইনে একটি সাধারণ সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তেরও তীব্র নিন্দা জানায় নীলদের একাংশ। এরপর থেকেই উত্তপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রাজনীতি।