অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধরে
গুরুতর আহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল করিম বাম কানে শুনতে পাচ্ছেন না।
শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজওয়ানুল রিয়াদ বলেন, ‘আমি বাম কানে কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। এটা নিয়ে ডাক্তারকে প্রশ্ন করলে তারা বলেছেন, তার কানের পর্দা ফেটে গেছে। এজন্য চারটা পরীক্ষা দিয়েছে, পরীক্ষাগুলো ঢাকায় করাতে বলেছেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাইয়ের ডান হাতটা ভেঙেছে। তাকেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল করিম রিয়াদ ও তার ছোটভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদ করিম।
এ সময় ভর্তির ৩০ টাকার বদলে ১০০ টাকা নেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। রিয়াদ এই টাকার রশিদ চাইলে তাকে মারধর করেন তারা। রিয়াদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হামলার শিকার হন তার ছোট ভাই রাশেদও।
রিয়াদ ও রাশেদ বর্তমানে ওই হাসপাতালেরই সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতালের কর্মচারী উদয় ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার বিকালে ক্যাম্পাস সংলগ্ন পার্কের মোড়ে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার রাত পৌনে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রেজওয়ানের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মামলা করব কিনা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আগে ছেলেরা সুস্থ্ হোক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি। মামলা করলে তো তারা আমাদের ছাড়বে না। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ইতোমধ্যে যে অভিযুক্ত উদয়ের বাবা কয়েক দফা মাফ চেয়েছেন। আমরা বলেছি, বিষয়টি আমরা পরে দেখব। এখন ভিকটিম যদি মামলা করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওই ছাত্রদের যাতে চিকিৎসার কোনো ধরনের ত্রুটি না হয় সেটি আমরা নিশ্চিত করেছি।’
রংপুর মেডিক্যালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করব। আমাদের কোনো স্টাফ অপরাধী হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’