ইন্দ্রনীল মিশ্র অনার্সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাস করেন। ফেল ছিল এক বিষয়ে। পরে আবার পরীক্ষা দিয়ে ওই বিষয়ে পাস করেন।
সেই ইন্দ্রনীল এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ সময়ে গত ৬ মে এডহকে যে ১১ জন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন তাদের মধ্যে ইন্দ্রনীলও একজন।
আগে থেকেই উপাচার্য আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ইন্দ্রনীলের বিষয়টি সামনে আসায় বিষয়টি আরও একবার আলোচনায় এসেছে।
ইন্দ্রনীল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০০৯ সালের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ওই বিভাগ থেকেই মাস্টার্স পাস করেন। অবশ্য মাস্টার্সে তিনি প্রথম শ্রেণি পান।
তার নিয়োগের বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এমদাদুল হক নিউজবাংলাকে জানান, বিভাগে নিয়োগের জন্য সার্কুলার দেয়া হয়েছিল। সেখানে আবেদনকারীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রি থাকতে হবে বলা হয়েছে। প্রথম শ্রেণি থাকতে হবে এমন বলা থাকে না। তবে আবেদনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে।
ইন্দ্রনীলের অনার্স পরীক্ষার রেজাল্টশিট
তিনি বলেন, ‘আমাদের সার্কুলার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দেয়া হয়েছে। কিন্তু সার্কুলার অনুযায়ী ইন্দ্রনীলের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই। তা ছাড়া সাধারণত ভাইভা নিয়ে একজন প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় কিন্তু এবার তা করা হয়নি। ভাইভা না নিয়েই তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
‘এমন একজনকে নিয়োগ দেয়া হল যে কোনোভাবেই শিক্ষক পদে কাম্য নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে। যদি এটা বাতিল হয়, তবে বিভাগের জন্য যেমন মঙ্গল হবে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও মঙ্গল হবে।’
ইন্দ্রনীলের বাবা চিত্ত রঞ্জন মিশ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অধ্যাপক চিত্ত রঞ্জন মিশ্র ও ইন্দ্রনীল মিশ্রের মোবাইলে কয়েকবার কল দেয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘এমন প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া বিস্ময়কর। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটার দেখভাল করছে। তাদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তীতে তাদেরকে যোগদান করতে দেবো কি না সেটা জানাতে পারব।’