চলতি অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপ করা কর অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘নো ট্যাক্স অন এডুকেশন’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। ১০ বছর আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সময়ে এই কর আরোপের প্রস্তাব করা হলেও মামলা, মালিকপক্ষের দাবি ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কর আদায় সম্ভব হয়নি।
এরই মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় আগামী বাজেটে আবারও কর আরোপের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সাধারণ করহার হ্রাস করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ থেকে উদ্ভূত আয়ের ১৫ শতাংশ হারে কর নির্ধারণ করা হয়েছিল। মহান এ সংসদে আমি এ করহার অর্থ আইনের মাধ্যমে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’
মানববন্ধনে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তামিম আহমেদ তুরাগ বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কী আমাদের অপরাধ? সরকার সকলকে সমান সুযোগ সুবিধা দিয়ে উচ্চশিক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি।’
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সজীব মিয়া বলেন, ‘এই করোনা মহামারির সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে মানবিকতার খাতিরে প্রণোদনা দেয়ার কথা। কিন্তু তার বদলে অনলাইন ক্লাস করিয়ে রীতিমতো টাকা আদায় করা হয়েছে। এর ওপর আবার কর। তাহলে আমরা যাব কোথায়?’
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নুসরাত ফারিন বিজেতা বলেন, ‘সরকারের অনেক ঘাটতি রয়েছে। ঋণ রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদেরকে কাছে টেনে নিয়ে সাধারণ মানুষ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজেদের ঘাটতি মেটাতে এ কর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।’
মানববন্ধনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তামজিদ হায়দার চঞ্চল কর প্রত্যাহারের দাবিতে তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ধানমন্ডির শংকরে এবং শুক্রবার বিকাল ৩টায় রামপুরার ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হবে।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিলও করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, শিক্ষা আমার অধিকার’, ‘শিক্ষা ও বাণিজ্য, একসাথে চলে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।