পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মজুমদারের বিরুদ্ধে ৫৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্তে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে সোমবার পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন উপসহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।
দুদক পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবিরের ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির আরও ঘটনার তদন্ত চলছে। মামলার প্রয়োজনে তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মজুমদার চাঁদপুরের শাহরাস্তি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া আবেদন ও ভাউচার তৈরি করে নিজেই অনুমোদন দিয়ে কলেজের চার তহবিল থেকে ৫৬ লাখ ৮ হাজার ৯৮৬ টাকা অগ্রণী ব্যাংকের কলেজ গেট শাখা থেকে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। যা ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মামলায় বলা হয়, হুমায়ুন কবির পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর এখন পর্যন্ত কর্মরত আছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা (ডিডিও) হিসেবে কলেজের নামে ২৯টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। সরকারি কলেজের সংশ্লিষ্ট হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন বা ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারি বিধিবিধানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৪ সালে জারিকৃত পরিপত্র প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক ছিল।হুমায়ুন কবির সরকারি বিধিবিধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের তোয়াক্কা না করে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছাত্র সংসদের কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তহবিল থেকে পাঁচ ছাত্রনেতা ও কর্মচারীর নামে ভুয়া আবেদনপত্র ও বিল ভাউচার তৈরি করে নিজেই অনুমোদন দিয়ে ১৫টি চেকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ দুই হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন; উন্নয়ন তহবিল থেকে উন্নয়ন কমিটির সুপারিশ ছাড়াই কোটেশন ছাড়া ভুয়া আবেদন ও বিল ভাউচার প্রস্তুত করে নিজে অনুমোদন দিয়ে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৮ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিবিধ তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত বাস্তবায়ন কমিটি গঠন না করে অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির ভুয়া আবেদনপত্র ও বিল ভাউচার বানিয়ে নিজে অনুমোদন করে ৩৭টি চেকের মাধ্যমে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৪২ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। তিনি বেসরকারি আদায় তহবিল থেকে ভর্তি কার্যক্রম ও ফরম পূরণ বাবদ সরকার নির্ধারিত ফিসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে সম্পূর্ণ টাকা হিসাব দুটিতে জমা করেন। ওই হিসাব থেকে ডিডিও হিসেবে তার চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ নেই। তারপরও তিনি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে সরাসরি ২৮টি চেকের মাধ্যমে ১৮ লাখ ৩ হাজার ৭০৬ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন।