সশরীরে ও অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে সম্মিলিত নীতিমালা করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
সোমবার এ বিষয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে সভা করে ইউজিসি এ সিদ্ধান্ত নেয়।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা ছাড়াও অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাসহ অনেকে।
বেলা তিনটায় সভা শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সভায় সশরীরে ও অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া, কবে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলা যায়, শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, অনলাইন-অফ লাইন এডুকেশন ও শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ (সোমবার) আমরা সবার কথা শুনলাল। কাল (মঙ্গলবার) ইউজিসি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে একটি সম্মিলিত নীতিমালা তৈরি করব। যা আপনাদের মঙ্গলবার জানানো হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সশরীরে ও অনলাইনে নেয়ার অনুমতি দেয় ইউজিসি।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সই করা এক চিঠি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্ট্রারদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের বিরাজমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা জরুরি। এ বিষয়ে ইউজিসি ইতিপূর্বে পাঠানো সরাসরি (ইনপারসন) ও অনলাইন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষা সরাসরি ও অনলাইনে নেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এর আগে বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে দেয়া সম্পন্ন হলেই আবাসিক হলযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছেন, সে তথ্য ইউজিসির কাছে চেয়েছি। যাদের বয়স ৪০ এর বেশি, বেশির ভাগই টিকা নিয়েছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
‘শিক্ষার্থীদের যাদের বয়স ৪০-এর কম তাদের বিশেষ বিচেবচনায় টিকা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। নতুন টিকা এলেই তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ক্ষেত্রে আবাসিক শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এ সংখ্যা যেহেতু বিশাল নয়, তাই দ্রুত তাদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।’
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ দফায় দফায় বাড়িয়ে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।