নতুন করে লকডাউন বেড়ে যাওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময় বাড়িয়ে ৬ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে এই সময় পর্যন্ত জরুরি সেবা দিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট খোলা রাখা হচ্ছে।
সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিতি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নিতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সোমবার বিষয়টি জানিয়েছে। রোববার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখার জারি করা সিদ্ধান্তের ফলে ৩১ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ইনস্টিটিউট, বিভাগ ও দপ্তর বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি প্রয়োজনে বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও দপ্তর খোলা রাখা যাবে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি পরিষেবাগুলো হলো, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট ও নিরাপত্তাব্যবস্থা চালু রাখার পাশাপাশি সরকারের অন্য নির্দেশনাও পালনের কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
গত ৫ এপ্রিল প্রথম ধাপের লকডাউনের আগেই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ, দাপ্তরিক কার্যক্রম সীমিত আকারে পরিচালনা ও বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বন্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরাও তাই সিদ্ধান্ত নেব।’
করোনাভাইরাস মহামারির পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সরাসরি ও অনলাইনে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান জানায়, পত্রপত্রিকায় এমন তথ্য শুনলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তেমন কোনো চিঠি যায়নি।
তিনি বলেন, ‘ইউজিসি যদি নির্দেশনা দেয় তাহলে হয়তো সরকারের অনুমতি চাওয়া লাগবে না। কেননা, আমি মনে করি ইউজিসি তো সরকারের অনুমতি নিয়েই নির্দেশনা পাঠাবে।
‘তবু আজ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মিটিং আছে। মিটিংয়ের পর বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানা যাবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জুনের শেষদিকে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষা শুরুর তারিখ জুনের ১৫ থেকে ১ জুলাইয়ের মধ্যে শুরুর চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ডিন।
রিফ্রেশমেন্ট ক্লাস শেষে পরীক্ষা শুরুর কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।
তিনি জানান, সব শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রিফ্রেশমেন্ট ক্লাস নেয়া হবে। তবে তা কোন নিয়মে, কীভাবে বা কত দিন নেয়া হবে তা বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
রিফ্রেশমেন্ট ক্লাস-পরীক্ষার ব্যাপারে ১৫ জুনের আগেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘রিফ্রেশমেন্ট ক্লাস এক সপ্তাহ তো নিতেই হবে, তবে দুই সপ্তাহ হলে তো ভালো। সেমিস্টার কী আলাদা আলাদা নেব, না কি দুই সেমিস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে নেব, তার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যেভাবেই পরীক্ষা হোক না কেনো রিভিউ ক্লাস নেয়া হবে।’
গত বছর ২ জুলাই সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ট্রেজারার, অনুষদের ডীন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও লাইব্রেরিয়ানের সমন্বয়ে এক অনলাইন মিটিংয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার বিষয়ে নয়টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর মধ্যে একটি ছিল, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হলে জগন্নাথেও রিফ্রেশমেন্ট ক্লাসের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হবে। এ সময় ব্যবহারিক ক্লাসও নেয়া হবে।