নানা দাবিতে আসন্ন বাজেটের ২০ ভাগ শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।
এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের মহাসচিব মো. জসিম উদ্দিন সিকদার। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল বাসার হাওলাদার।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের পাশের দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে বাজেটে শিক্ষাখাতে ১৮ থেকে ভাগ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা প্রতিবছর ১১ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তাছাড়া, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো অর্থ বরাদ্দ থাকে না বাজেটে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিভিন্ন প্রজেক্টে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয় তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয় না। সেসব ক্ষেত্রে অর্থের অপচয় ও দুনীর্তি লক্ষ করা যায়। তাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন-বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ একান্ত জরুরি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় ১৫ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সংসদ টিভি ও অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত আছে। তবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এসব পাঠদান প্রক্রিয়া তেমন সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে অনলাইন পাঠদানের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সম্পৃক্ততা নেই। ইন্টারনেট অ্যাকসেস, ডিভাইসসহ নানা সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাস তেমন সফল হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে মোট ১৬টি দাবি তুলে ধরে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।
দাবিগুলো হলো:
০১. সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা।
০২. শিক্ষাখাতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা।
০৩. শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়িভাড়া ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ভাতা প্রদান।
০৪. অনার্স-মাস্টার্স, ননএমপিও, স্বতন্ত্র এবতেদায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করা।
০৫. অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা, যাতে তারা ৩০ দিনের মধ্যে টাকা হাতে পান এবং মাসিক পেনশন পান।
০৬. অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষক, সহকারি অধ্যাপক, প্রভাষকসহ সকলের উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা।
০৭. শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংকঋণ মওকুফ।
০৮. ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সহায়তা মাসে মাসে দেয়া।
০৯. তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের বেতনক্রম ১১ গ্রেডে উন্নীত করা।
১০. শিক্ষার্থীদের জন্য মিড ডে মিল চালু করা, যাতে তাদের শারীরিক পুষ্টি নিশ্চিত হয়।
১১. অস্বচ্ছল অভিভাবকদের জন্য বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দেয়া।
১২. অনলাইন শিক্ষার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট, ডিভাইস কেনার যন্ত্র বিশেষ বরাদ্দ।
১৩. শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঋণ চালু করা।
১৪. শিক্ষকদের দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ।
১৫. বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করা।
১৬. ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনা।