উপাধ্যক্ষ পদে ড. এ এস কাইউম উদ্দিনের যোগদান ঠেকাতে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সব গেট বন্ধ করে অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ।
ব্রজমোহন কলেজের শতবর্ষী গেট, শহীদ মিনার গেট এবং মসজিদ গেট আটকে দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ভেতরে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।
কলেজের সব গেট বন্ধ থাকায় জরুরি কাজে আসা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। কলেজ ক্যাম্পাসে সোনালী ব্যাংকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে দেয়াল টপকে আসা-যাওয়া করেছেন অনেকে ।
কলেজের গেট বন্ধ করাসহ আন্দোলন বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
তবে ছাত্রলীগ কর্মী রাজু দূর থেকে উচ্চস্বরে বলেন, ‘কাইউম উদ্দিনকে যোগদান করতে দেয়া হবে না। দুর্নীতিবাজকে আমরা চাই না। তাই গেট আটকে দিছি কেউ যেন না ঢুকতে পারে।’
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০ মে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রধান ড. এ এস কাইউম উদ্দিনের একই কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে পদায়ন হয়। তবে এখনও তিনি ওই পদে যোগ দিতে পারেননি।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন বেশকিছু দুর্নীতির অভিযোগ আছে তার নামে। তাই তার যোগদান ঠেকাতে আন্দোলনে নামে ছাত্রলীগ।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা টানা চারদিন ধরে কলেজের প্রশাসনিক ভবন ও অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। অবশেষে সকালে সব গেট বন্ধ করে ড. কাইউমের যোগদান ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ।
কলেজের প্রশাসনিক ভবনে জরুরি কাজে আসা বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নওশন আরা বলেন, ‘কলেজে বেশ কয়েকটি কাজ আছে। সার্টিফিকেটের বিষয়ে জানতে এসেছি। কিন্তু ঢুকতে পারছি না। অনেক অনুরোধ করেও কাজ হচ্ছে না।’
অর্থনীতি বিভাগের অনার্স চতুর্থ বষের ছাত্র আলিফ মাহামুদ বলেন, ‘পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে এসেছি। গেট বন্ধ থাকায় ভাবছি দেয়াল টপকে ঢুকব।’
কলেজের ভেতরে সোনালী ব্যাংকে এসে ভোগান্তিতে পড়া একাধিক ব্যক্তি জানান, বিদ্যুৎ বিল দিতে এসে বিপাকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে কাইউম উদ্দিন বলেন, ‘আমি কলেজে যোগদান করতে যেতে পারছি না। ফোনে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কারা এসব করছে সবাই জানে। আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। যোগদান দিতে না পারার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই জানাব। কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি রিস্ক নিতে চাচ্ছেন না।’
ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন. ‘গেট বন্ধ করে আন্দোলন করছে ওরা। আমি ওদের বলেছি কোনো সহিংস আন্দোলন যেনো না হয়। জরুরি কাজে যারা আসছে তাদের ঢুকতে দিতে বলা হয়েছে। অনেকে কাজ করেও গেছেন। এখন পর্যন্ত উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করতে আসেনি কাইউম সাহেব। আদেশে অবিলম্বে যোগদান করতে বলা হয়েছিল। আমার সঙ্গে কাইউম সাহেবের তেমন কোনো যোগাযোগ হয়নি।’