বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউনে খোলা রাখায় কওমি মাদ্রাসাকে জরিমানা

  •    
  • ১১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০৩

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পরলে ২৬ মার্চ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হলেও পরে বিশেষ বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসা চালু রাখার সুযোগ করে দেয় সরকার। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ার পর সরকার এবার কওমি মাদ্রাসাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তবে এর পরেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় কওমি মাদ্রাসা চালু রাখার খবর আসতে থাকে। এরপর গত ৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়।

নেত্রকোণায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ছাত্র রেখে জরিমানা গুনল একটি কওমি মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দিয়ে ছাত্রীদের নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

জেলার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নাজিরগঞ্জ বাজার বায়তুল কোরআন মাদ্রাসাকে এই জরিমানা করা হয়।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চালু রেখে এই প্রথম কোনো কওমি মাদ্রাসা শাস্তির মুখে পড়েছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাফর আরিফ চৌধুরী জানান, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণকে বাধ্য করতে শনিবার জেলার প্রায় সব উপজেলায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আটপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার নেতৃত্বে এই অভিযান চলাকালে ওই মাদ্রাসায় ২০ জনের মতো ছাত্রীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসা চালু রাখার বিষয়ে শিক্ষকরা কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরে মাদ্রাসার শিক্ষকসহ ছয় জনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এদের মধ্যে সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে কার্যক্রম চালানো ও সংক্রমণে ঝুঁকি বাড়ানোয় মাদ্রাসাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মাওলানা মাহবুবকে জরিমানা করা হয় দুই হাজার টাকা।

সুলতানা রাজিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের কাছে তিনি (মাওলানা মাহবুব) অঙ্গীকার করেছেন সরকারি নির্দেশ অমান্য করে তিনি আর মাদ্রাসা কাজ চালাবেন না।’

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২৯ মার্চ সরকার এক প্রজ্ঞাপনে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পরলে ২৬ মার্চ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হলেও পরে বিশেষ বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসা চালু রাখার সুযোগ করে দেয় সরকার।

তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ার পর সরকার এবার কওমি মাদ্রাসাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।

তবে এর পরেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় কওমি মাদ্রাসা চালু রাখার খবর আসতে থাকে। এরপর গত ৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়।

এতে বলা হয়, ‘সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু আবাসিক ও অনাবাসিক মাদ্রাসা এখনও খোলা রয়েছে মর্মে জানা যায় যা বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ।… বর্ণিত অবস্থায়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কওসি মাদ্রাসাসহ (এতিমখানা ব্যতীত) সব মাদ্রাসা (আবাসিক ও অনাবাসিক) বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো। এ নির্দেশ পালনে কোনোরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না।’

আরও জরিমানা

নাজিরগঞ্জ বাজার বায়তুল কোরআন মাদ্রাসা ছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় আরও ২৯ জনকে জনকে সাত হাজার ১০০ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রের জাফর আরিফ চৌধুরী জানান, জেলা সদর, আটপাড়া, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মদন উপজেলার বিভিন্নস্থানে এই আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।

লকডাউনের মধ্যে অকারণে বাইরে ঘোরাঘুরি ও মাস্ক না পরায় জেলা সদরের সাতপাইয়ে পাঁচ জনকে ৮০০ টাকা, রাজুর বাজার এলাকায় তিন জনকে ৪০০ টাকা, মদন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একজনকে ২০০ টাকা, ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চার জনকে ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

সরকারের নির্দেশনার পরও করোনাকালে সব কওমি মাদ্রাসা বন্ধ হয়নি। ফাইল ছবি

দুর্গাপুর উপজেলা চার জনকে ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয় একই কারণে।

কলমাকান্দা উপজেলায় ১২ জনকে জরিমানা করা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।

শুক্রবারও এই জেলায় অভিযান চালিয়েছে ১৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিন ৬৩ জনকে ২৫ হাজার ৫০০টাকা জরিমানা করা হয়।

জরিমানার পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক লিফলেট ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাফর আরিফ চৌধুরী।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনগণকে ঘরের বাইরে না যেতে বলা হয়েছে। তবে প্রথম দিন থেকেই লডকাউন শিথিল হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন দেয়ার ঘোষণা এসেছে। সেদিন থেকে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস ও যানবাহন বন্ধ করে দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। রোববার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর