বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গরিব ঘরের জমজ ভাই হবেন ডাক্তার

  •    
  • ৬ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:১৩

‘গরিবের ঘরে জন্ম হইছি। তাই গরিব মানুষের দুঃখ বুঝি। যখন এমবিবিএস শেষ করতে পারব তখন গরিব মানুষের সেবা করাই হবে আমার প্রধান কাজ।’

অভাবের জন্য লেখাপড়া শেষ করতে পারেননি বিল্লাল হোসেন। স্বপ্ন ছিল নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করবেন সন্তানদের মাধ্যমে। তাই অটোরিকশা চালিয়ে হাজারো কষ্ট আর সীমাবদ্ধতার মাঝেও সন্তানদের পড়ালেখা থেমে যেতে দেননি।

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার মানোরা গ্রামে চার সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার।

চার সন্তানের মধ্যে বড় দুজন জমজ। আরিফুল ইসলাম আর শরিফুল ইসলাম। দুই ভাই ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উপজেলার মান্দারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পায়। এলাকাবাসী ও কিছু বিত্তশালী মানুষের সহযোগিতায় ভর্তি হয় কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজে। সেখান থেকেও এইচএসসিতে পায় জিপিএ-৫।

গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় আরিফ সারা দেশে ৮২২ তম হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে এবং শরিফ ১১৮৬তম হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

সন্তানের এই সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে আনন্দে কেঁদে ফেললেন বিল্লাল হোসেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আঁই (আমি) নিজে নিজে ইন্টারমেডিয়েট হাস (পাস) কইচ্ছি (করেছি)। অভাবের লাই (জন্য) আর বেশি লেহা-হড়া (লেখাপড়া) কইত্তে হারি ন (পারিনি)। তয় আই মনে মনে হতিজ্ঞা (প্রতিজ্ঞা) কইচ্ছি আর পুলামাইয়া বেজ্ঞুনরে (সবাইকে) আই হড়ালেহা করামু।

‘আর হোলা (ছেলে) দুগান (দুজন) যখন মেডিক্যালে হরীক্ষা (পরীক্ষা) দিত যায় আই তহন হরীক্ষা কেন্দ্রে যাইতাম হারি নাই। তয় আল্লার কাছে দোয়া কইচ্ছি। আল্লাহ আর কথা হুইচে (শুনেছে)।’

বিল্লালের বাকি দুই সন্তানের মধ্যে সাইফুল ইসলাম স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে এবং আমেনা আক্তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।

শরিফ বলেন, ‘আজকের এই সফলতার জন্য বাবা-মার অবদানই বেশি। পাশাপাশি এলাকার কিছু বিত্তশালী মানুষের সহযোগিতায় আজ এতটুকু পর্যন্ত আসতে পেরেছি।’

আরিফ বলেন, ‘গরিবের ঘরে জন্ম হইছি। তাই গরিব মানুষের দুঃখ বুঝি। যখন এমবিবিএস শেষ করতে পারব তখন গরিব মানুষের সেবা করাই হবে আমার প্রধান কাজ।’

অটোরিকশাচালকের যমজ ছেলের এই সফলতার বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) বিকেলে আমি খবরটা পেয়েছি। আমি জেনেছি যমজ দুই ভাই মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। খুবই খুশির খবর। তাদের বাবা অটোরিকশাচালক। যদি এই দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার জন্য কোনো সহযোগিতার দরকার হয় উপজেলা প্রশাসন তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর