অ্যালেক্স মার্টিন নামে যার মেইলের সূত্র ধরে গবেষণায় চুরির অভিযোগে পদাবনতির সাজা পেয়েছেন সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান।
৩১ মার্চ বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনি এ মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে মামলাটির বিষয়ে পরে আদেশ হবে বলে বিচারক আদালতের এজলাসে জানিয়ে দেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম নিউজবাংলাকে জানান, সামিয়া মামলার আবেদন করেছেন। তবে আদালত এ বিষয়ে এখনও কোনো আদেশ দেয়নি।
সামিয়া রহমানের পক্ষে মামলার আবেদন করেন আইনজীবী তানভীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘সামিয়া রহমানকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তিনি আদালতের কাছে ন্যায় পাওয়ার জন্য এসেছেন।’
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর সামিয়া রহমান এবং ক্রিমোনলজি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে প্লেজারিজমের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযোগে দাবি করা হয়, তদন্ত কমিটি ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর শিকাগো জার্নালের ই-মেইলের ভিত্তিতে সামিয়া রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহযোগী অধ্যাপক হতে ডিমোশন দিয়ে সহকারী অধ্যাপক (অবনমিত) দিয়ে যে শাস্তির সুপারিশ করে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভুয়া, তথ্য বিভ্রাট, বানোয়াট এবং সৃজিত।
- আরও পড়ুন: সামিয়াসহ ঢাবির তিন শিক্ষকের পদাবনতি
ওই তারিখে শিকাগো জার্নাল থেকে অফিসিয়ালি সামিয়া রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোনো ই-মেইল কখনোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ই-মেইলে পাঠানো হয়নি। অ্যালেক্স মার্টিন বলে শিকাগো জার্নালে কেউ কখনও কাজ করেনি। এমনকি শিকাগো প্রেসে অ্যালেক্স মার্টিন নামে কোনো ব্যক্তি নেই।
সামিয়া রহমান তার ফেসবুকে শিকাগো জার্নালের অফিসিয়াল এডিটর ক্রেইজ ওয়াকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তের তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চান।
ক্রেইজ ওয়াকার জানান, অ্যালেক্স মার্টিন বলে কেউ কখনও শিকাগো জার্নালে ছিল না, কেউ নেই এবং অ্যালেক্সশিকাগোজার্নাল@জিমেইল ডমকম নামে তাদের কোনো ই-মেইল আইডি নেই।
এখানে কথিত অ্যালেক্স মার্টিন সেই ডোমেইনও ব্যবহার করেননি। নিজস্ব ব্যক্তিগত এলেক্সশিকাগোজার্নাল@জিমেইল ডটকম থেকে মেইলটি পাঠানো হয় এবং এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেই মেইলের কোনো সফট কপি সামিয়া রহমানকে দেয়া হয়নি।
মিথ্যা ও বানোয়াট মেইল আইডির ওপর ভিত্তি করেই সামিয়া রহমানকে ‘চৌর্যবৃত্তির’ মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
সামিয়া রহমান শিকাগো জার্নালের ওয়েবসাইট শিকাগোজার্নাল ডটকমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে জানতে পারেন, তাদের অফিসিয়াল ই-মেইল আইডি এডিটর@শিকাগোজার্নাল ডটকম এবং ওয়েব সাইটের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ক্রেইজ ওয়াকার।
এতে বুঝা যায়, শিকাগো জার্নালে অ্যালেক্সশিকাগোজার্নাল@জিমেইল ডটকম নামে কোনো অফিসিয়াল ই-মেইল আইডি নেই। বিষয়টি সামিয়া রহমানের সন্দেহ ও উদ্বেগজনক মনে হলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি অন্য এক জায়গায় যোগাযোগ করলে অ্যালেক্স মার্টিন ফেক নাম এবং ওই মেইল আইডি তৈরিকৃত এবং বানোয়াট।
মামলার আবেদনে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে গ্রহণ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আসামিকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন সামিয়ার আইনজীবী।