করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পেছানোর দাবির মুখেও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই নিতে যাচ্ছে সরকার।
আগামী ২ এপ্রিল এই পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আলোচনা শেষে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
১ লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে ৫৫টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রয়োজন হলে কেন্দ্র আরও বাড়ানো হবে।’
গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণের অনীহার মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ এরই মধ্যে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর সংক্রমণের হার বর্তমানের অর্ধেক থাকাকালেই ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরীক্ষা।
তবে সংক্রমণ আর মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পরও এবার লকডাউন বা সরকার সাধারণ ছুটির মতো সিদ্ধান্ত নিতে এখনও অপেক্ষা করছে। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শেষে এই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।
মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার সব সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পরীক্ষার্থীদের কিছু কিছু বিষয় মানতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরে যেতে হবে। স্যানিটাইজ করতে হবে। বাইরেও এসব ব্যবস্থা থাকবে। অভিভাবকরা যাতে বাইরে ভালোভাবে পরীক্ষার এক ঘণ্টা অবস্থান করতে পারেন।’
পরীক্ষা নিয়ে গুজব বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ তার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। প্রশ্নপত্র নিরাপত্তার সঙ্গে পুলিশ নিয়ে যাবে। ডিসির ট্রেজারিতে রাখা হবে।’
পরীক্ষার আগ পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা এবং কেন্দ্রের আশপাশে কোনো ফটোকপি মেশিন থাকতে পারবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যে ব্যবস্থা নিয়েছি, সবাই মিলে কাজ করলে ভর্তি পরীক্ষা সফলতার সঙ্গে নেয়া সম্ভব।’
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না থাকায় শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে আসেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ দাবিতে তারা রাজধানীসহ সারা দেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২১ মার্চ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিট করা হয়। তাইমুর খান বাপ্পির পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী মুনতাসির মাহমুদ রহমান। এতে শিক্ষাসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়া কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি। তারপরও মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এটি তাদের সঙ্গে বৈষম্য। এতে পরীক্ষার্থী, অবিভাবক ও শিক্ষকরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বেন।
পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর করা রিটটি শুনানির জন্যে মঙ্গলবার ২৩ মার্চ হাইকোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) ছিল। তবে গতকাল এর ওপর শুনানি হয়নি, আজও যথারীতি কার্যতালিকায় রয়েছে এটি।