বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি: সেই ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২১ ১৭:৫০

তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রমাণিত হলেও গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা। এরপর তৎপর হয় স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা অফিস।

মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি করে নিয়োগ পাওয়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আট স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে এক বছর পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

ওই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এ বছরের জানুয়ারি থেকে স্থগিত করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী।

ওই শিক্ষকরা হলেন গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জের নূরে হাবিব ও তার বোন রাফিয়া মোর্শেদা, মাস্টারপাড়ার নুরনাহার বেগম, তার বোন গুল বাহার ও সুলতানা পারভিন, সোনাতলা গ্রামের মুন্নি খাতুন, গাড়ামারা গ্রামের আম্বিয়া খাতুন এবং ঘোষপাড়ার জেসমিন ওরফে কবিতা।

তাদের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আট শিক্ষকই উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রমাণিত হলেও গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।

এরপর তৎপর হয় স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা অফিস। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (রংপুর) এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, গোবিন্দগঞ্জের মাস্টারপাড়ার নুরনাহার বেগম, তার দুই বোন গুল বাহার ও সুলতানা পারভিন এবং ঘোষপাড়ার জেসমিন ওরফে কবিতা ভুয়া সনদে চাকরি নেন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন। যা আইন পরিপন্থি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।

দুদক এই চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের নামে অর্থ আত্মসাতের চারটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো বিচারাধীন।

তিনি জানান, অন্য চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও তদন্তাধীন। প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী বলেন, ‘গণমাধ্যমের বদৌলতে আবারও তদন্ত কার্যক্রম হয়েছে। তদন্তে জালিয়াতির সত্যতা পেয়ে অভিযুক্তদের বেতন-ভাতা স্থগিত করাসহ তাদের শাস্তি চেয়ে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছি। তাছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন আবারও অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি।’

তিনি আরও জানান, ওই আট শিক্ষকের মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাইয়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেলেই তাদের চাকরিচ্যুত করাসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গোবিন্দগঞ্জের আজেদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে বাবা-নানাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে ভুয়া সনদ দেখিয়ে তারা চাকরি নেন। তাদের জালিয়াতির কারণে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত মেধাবীরা।

অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ২৫ নভেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামকৃষ্ণ বর্মনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন।

ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠান ইউএনও। তারপরও দীর্ঘ সময় ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

নিউজবাংলার প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর কর্মকর্তাদের তৎপরতায় বিষয়টি রাজধানীতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পর্যন্ত যায়।

এর পর তাদের সেখানে তলব করেন কর্মকর্তারা।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযুক্তরা লিখিত জবাব ও মুক্তিযোদ্ধা সনদের কাগজপত্র নিয়ে হাজির হন। সেগুলো এখন যাচাই-বাছাই হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী।

এ বিভাগের আরো খবর