নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এক মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে আসা দুই ভাইসহ তিন শিশু জানিয়েছে, মাদ্রাসার হুজুরে তাদের মারধর করেন। তাই তারা পালিয়ে বাড়ি চলে যেতে চায়।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ফিদা সিএনজি পাম্পের সামনে বিকাল চারটার দিকে তাদের সঙ্গে কথা হয়।
এরা তিনজনই পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার জামিয়া কুরানিয়া সুন্নীয়া মাদ্রাসার ছাত্র। বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সিংগুলা গ্রামে।
তাদের দুজন হলো নয় বছরের হাসিব ও তার ভাই সাত বছরের যুবায়ের। তারা সিংগুলা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। অপরজন হলো উধখোলা গ্রামের সাত বছর বয়সী মো. রাফি। তার বাবা মুদি দোকানি বাবুল মিয়া।
জানতে চাইলে তারা বলে, দুপুরে ভাত খেয়ে তারা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসে ওঠে। তারা তাদের বাড়ি যেতে চায়। কিন্তু পথে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।
পালানোর কারণ সম্পর্কে ওরা বলে, মাদ্রাসায় গেলে হুজুর মারধর করেন। সে জন্য তারা পালিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে।
তবে হাসিব বলে, ‘আমাদের আগে মারধর করত, এখন করে না। বাড়ির জন্য মন খারাপ করছে, তাই তো আমরা পালিয়ে বাড়িত চইল্যা যাইতে চাই।’
পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদের নিয়ে যায় গজারিয়া থানা-পুলিশ।
রাত সাড়ে আটটার দিকে গজারিয়া থানায় আসেন তিন ছাত্রের অভিভাবকরা। তাদের মধ্যে হাসিব ও জুবায়েরের মা হাফছা বেগম বলেন, স্থানীয় সংবাদকর্মী ও পুলিশের সহায়তায় তার দুই ছেলেকে ফিরে পেলেন তিনি। ভবিষ্যতে ছেলেদের পড়ালেখা এবং মাদ্রাসাজীবন নিয়ে আরও সতর্ক হবেন।
জানতে চাইলে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে জামিয়া কুরানিয়া সুন্নীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মো. নাজির আহমেদ বলেন, ‘এই তিন বাচ্চা গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাড়ি থেকে এসেছে। বাড়ির জন্য তাদের মন খারাপ। সেজন্য হয়তো তারা পালিয়ে গেছে। তবে তাদের কোনো রকম মারধর করা হয়নি। এই মাদ্রাসার কোনো শিক্ষকই ছাত্রদের মারধর করেন না।’
গজারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তানভির হাসান জানান, দাউদকান্দি থানা-পুলিশের মাধ্যমে তিন ছাত্রকে তাদের অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।