ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। অনলাইনে এ আবেদন চলবে ৩১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রশাসনিক ভবনের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে (কক্ষ নং-২১৪) আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন ভর্তির আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও ভর্তি কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচটি ইউনিটের অধীনে আগে মোট আসন ৭ হাজার ১১৮টি থাকলেও এবার তা বেড়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞান নামে একটি নতুন বিভাগ খোলায় আসনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভাগটি বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে থাকবে। আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগে এবার ১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ফলে এবার মোট আসনসংখ্যা ৭ হাজার ১৩৩টি ।
এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে ১ হাজার ৮১০ , কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে ২ হাজার ৩৭৮, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে ১ হাজার ২৫০, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে ১ হাজার ৫৬০ এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটে ১৩৫টি আসন রয়েছে ৷
বেড়েছে ভর্তির আবেদন ফি
বিগত বছরগুলোতে ভর্তির আবেদন ফি ৪৫০ টাকা থাকলেও এবার ২০০ টাকা বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৬৫০ টাকা৷ এ বিষয়ে উপাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, লিখিত এবং ঢাকার বাইরে পরীক্ষা হওয়াতে এবার আবেদন ফি বাড়ানো হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা হিসাব করে দেখেছেন, জনপ্রতি আরও ১৫০ টাকা বেশি খরচ হবে। তারপরও শিক্ষার্থীদের থেকে ৬৫০ করেই নেয়া হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা অথবা রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি জমা দিতে হবে। ১ এপ্রিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত টাকা জমা দেয়া যাবে । অন্যান্যবার শুধু নির্দিষ্ট সরকারি ব্যাংকে আবেদন ফি জমা দিতে পারলেও এবার শিক্ষার্থীরা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারবে।
১ এপ্রিল বিকেল ৩টা থেকে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগ পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।
পরীক্ষার কেন্দ্র
ঢাকা বিভাগের বাইরের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা দেশের সকল বিভাগীয় শহরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থী নিজের সুবিধা অনুযায়ী কেন্দ্র পছন্দ করতে পারবে। তবে নিজ নিজ বিভাগীয় শহরে যেন শিক্ষার্থীরা কেন্দ্র পছন্দ করে সেজন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছেন উপাচার্য।
উপাচার্য বলেন, আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হতো। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও ভোগান্তির কথা উঠে আসে। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিও এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এসব বিষয়কে বিবেচনায় রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এবার বিভাগভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ।
আবেদনের যোগ্যতা
ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে ‘ক’ ইউনিটের জন্য মাধ্যমিক/সমমান এবং উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষায় (৪র্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫), ‘খ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০), ‘গ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ ( আলাদাভাবে ৩.৫), ‘ঘ’ ইউনিটের জন্য মানবিক শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০) ও বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে ৩.৫) এবং ‘চ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭.০ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.০) থাকতে হবে ।
পরীক্ষার সময়সূচি
এবারের ক-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২১ মে ২০২১ শুক্রবার, খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২২ মে ২০২১ শনিবার, গ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার, ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮ মে ২০২১ শুক্রবার এবং চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ৫ জুন ২০২১ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
উপাচার্য বলেন, এবার যেহেতু বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হবে, সেহেতু শিক্ষার্থীদের আসতে কিছুটা সময় লাগবে। তাই প্রতিবার ১০টা থেকে হলেও এখন ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরু হবে । চলবে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
মানবণ্টন
এবারের ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। শুধুমাত্র ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষা হবে।
চ-ইউনিটের শিক্ষার্থীরা এমসিকিউ ৪০ নম্বরের পরীক্ষা দেবে । এর ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তীতে মেধাক্রম অনুযায়ী ১ হাজার ৫০০ জন ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় পাবে। ‘চ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট এবং অঙ্কন পরীক্ষার জন্য ৬০ মিনিট সময় পাবে ।
মাধ্যমিক জিপিএর ওপর ১০ ও উচ্চমাধ্যমিক জিপিএর ওপর ১০ করে মোট ২০ নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।