হল না ছাড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন হুঁশিয়ারি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। হলে থাকতেই অনড় তারা।
গ্রামের একদল বাসিন্দার হামলার শিকার হওয়ার পরদিন শনিবার আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তালা ভেঙে বন্ধ থাকা হলগুলোতে প্রবেশ করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয় রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সই করা এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। এই সময়ের মধ্যে হল না ছাড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দেয়া হয়।
শাস্তির হুমকির মুখেও অনড় শিক্ষার্থীরা। হলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হলেই ছাত্ররা অবস্থান করছেন। সব হলেই অবস্থান করেছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। হলে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরও শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, তারা হল ছাড়বেন না। আরও শিক্ষার্থী হলে আসবে। সবাইকে নিয়ে একজোট হয়ে হলে থাকতে চান তারা।
হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে মেয়েদের হল অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মেয়েদের হলে তোলার পর ব্রিফিং করা হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও কোনো কারণ ছাড়াই এখনও হল বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
হল বন্ধ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি প্রশাসনিক সভা শেষ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা আবাসিক হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার জন্য অনুরোধ করবে।
হলের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু করার নেই। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের কথা চিন্তা করেই হল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’
হল শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। তবে কেন হল ছাড়তে হবে এই প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, এটি একটি জটিল প্রশ্ন। মূলত সরকারের নির্দেশনার ভিত্তিতেই হলগুলো বন্ধ হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে থাকার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ প্রতিটি হলের প্রভোস্টকে সঙ্গে নিয়ে হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করব। যদি তারা না মেনে নেন তবে পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের লোকদের সাথে তারা কথা বলবেন।’
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তার জন্য পুলিশি ব্যবস্থা রেখেছি। যদি কোনো শিক্ষার্থী নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তবে আমরা তাকে নিরাপত্তা দেব।’