বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওভাবে কথাটি বলিনি: জাবি প্রক্টর

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৬:৩৬

ভাইরাল বক্তব্যটি নাকচ করলেও প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমরা তো নানান রকম কথা বলি। হয়ত এমন হতে পারে যে, ক্যাম্পাসের বাইরে এসে আমরা কতটুকু রোল প্লে করতে পারি, কিংবা আমি যে গ্রামের মানুষকে ট্রেস করব- ওরা তো জানে না যে আমি প্রক্টর।’

গেরুয়া গ্রামবাসীর সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের সংঘর্ষের সময় শুক্রবার রাতে প্রক্টর ফিরোজ উল হাসানের একটি মন্তব্য কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

একটি অনলাইন সংবাদপত্রে জাবি প্রক্টরের বরাত দিয়ে বলা হয়, তিনি ক্যাম্পাসের বাইরের শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেবেন না।

এই মন্তব্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তবে ফিরোজ উল হাসানের দাবি, তিনি ‘ওভাবে’ বিষয়টি বলেননি। ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষকেরা কতটা ভূমিকা রাখতে পারেন, সে বিষয়টিই তিনি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন।

নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি দাবি করেন, তার বক্তব্য ‘মিসকোট’ করা হয়েছে।

অনলাইনে ভাইরাল মন্তব্যের বিষয়ে শনিবার জাবি প্রক্টরের বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। জবাবে তিনি বলেন, ‘বক্তব্যটি কমপ্লিটলি কল্পনাপ্রসূত। এ রকম বক্তব্য আমি কোথাও দিইনি। গতকাল (শুক্রবার) অনেকগুলো মিডিয়ায় আমি কথা বলেছি। কোথাও এই বক্তব্য আসেনি। তবে কয়েকটি অনলাইন মিডিয়া এমন বক্তব্য ছেপেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। কম হলেও হাজার খানেক ফোন আমি গতকাল রিসিভ করেছি। আমি যদি শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব না-ই নিই তাহলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত আমি ওখানে কেন দাঁড়িয়ে থাকব।’

ভাইরাল বক্তব্যটি নাকচ করলেও ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমরা তো নানান রকম কথা বলি। হয়ত এমন হতে পারে যে, ক্যাম্পাসের বাইরে এসে আমরা কতটুকু রোল প্লে করতে পারি, কিংবা আমি যে গ্রামের মানুষকে ট্রেস করব- ওরা তো জানে না যে আমি প্রক্টর। ওরা তো আমাকেও ছাত্র মনে করতে পারে। হয়ত এমন আলোচনা হতে পারে যে, ওখানে গিয়ে আমরা গ্রামবাসীকে কীভাবে ফেস করব? ছাত্রদের আমরা যেভাবে ফেস করতে পারি, গ্রামের মানুষ কি সেটা বুঝবে? গ্রামের মানুষ আমাদের কেন সম্মান করবে।

‘সুতরাং আমরা এমন আলোচনা হয়ত করেছি যে, ওপারে গিয়ে আমরা ওখানকার জনগণকে কতটুকু ম্যানেজ করতে পারব। ওপারে আমাদের রোল কতটুকু ইফেক্টিভ হবে? তাদের আমরা কতটুকু কনভিন্স করতে পারব?’

গেরুয়াতে সহিংসতার পর প্রক্টরের ভূমিকা কী ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরুতে আমি জানার চেষ্টা করেছি আসলে কী হয়েছে। যখন জানতে পারলাম শিক্ষার্থীদের আটকে রেখেছে এবং মারছে তখন আমি নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্পটে গিয়েছি। আরেকজন অ্যাসিসটেন্ট প্রক্টর আমার সঙ্গে ছিল। অন্যদের ফোন করেছি গেরুয়াতে আসার জন্য। গিয়ে শুনলাম একজন শিক্ষার্থী সিরিয়াসলি আহত হয়েছে এবং তাকে আটকে রেখেছে। আমার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ওই শিক্ষার্থীকে আগে উদ্ধার করা।’

ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক কোনো ঝামেলা তৈরি হলেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রক্টরের প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাস্থা তৈরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন জাবি প্রক্টর।

তিনি বলেন, আসলে প্রক্টর তো ছাত্রদের নিয়ে কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের ইস্যু আসলে প্রক্টরের সঙ্গে সম্পর্কটা চলে আসে। প্রক্টর তো একজন। বিশজন না। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীদের কোনো ইস্যু আসলে কিংবা তাদের স্বার্থে আঘাত আসলে প্রক্টর যদি স্বার্থ সংরক্ষণ করতে না পারে তখন অভিযোগের আঙুল স্বাভাবিকভাবেই প্রক্টরের দিকে যায়।’

গেরুয়াতে সহিংসতার পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা

ফিরোজ উল হাসান দাবি করেন তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেন। প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেই তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করেন।

শুক্রবারের ঘটনা প্রাথমিকভাবে সামাল দিতে প্রশাসনের কোনো ব্যর্থতা ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

‘আমরা সব সময় প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি।’

ঘটনাস্থলে পুলিশ যেতে দেরি করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সময়টা লেগেছে কারণ, উভয়পক্ষে যারা মুখোমুখি হয়েছিল তারা ছিল অসংখ্য। দুই পক্ষেই দুই-তিন হাজার করে। এত বড় একটা ক্রাউডকে ম্যানেজ করতে আসলে অনেক সময় লাগে। বিশজনের ক্রাউডকে ম্যানেজ করা অপেক্ষাকৃত সহজ হয়। যদিও শুরুর দিকে অনেকটা ম্যানেজ হয়েও গিয়েছিল। পরে যখন পুলিশের সহযোগিতায় ঝুঁকি নিয়ে আহত ছেলেটিকে আমরা উদ্ধার করে নিয়ে আসলাম, শিক্ষার্থীরা তখন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।’

গেরুয়া গ্রামবাসীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘাতের কারণ কী জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ক্রিকেট খেলা কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামের একটা ছেলের ঝামেলা হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে উভয়পক্ষের মধ্যে একটা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। হয়তো অন্য আরও কোনো ইস্যু আছে তাদের। এতগুলো ছেলেমেয়ে ওখানে থাকে। হয়ত কোনো না কোনোভাবে তাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল। সব মিলিয়ে হয়ত তারা সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের গ্রামে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার কথা জানান প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান।

তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাস খোলা থাকলে আসলে খুব বেশি শিক্ষার্থী ওখানে থাকে না। সামান্য পরিমাণ থাকে। গণরুমে যারা থাকে তারা হয়ত একটু ভালো থাকার জন্য ওদিকে থাকতে চায়। আর আমরা গতকাল থেকেই পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরাপত্তার বিষয়গুলোই আলোচনা করছি।

‘আমাদের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রাইম কনসার্ন। সরকারের উচ্চপর্যায়েও আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর