দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভাগীয় শহর খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের খসড়া আইনে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় সংসদ।
একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিল-২০২১’বিল প্রস্তাব করেন। এরপর কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
রাষ্ট্রপতির অনুমতি পেলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
দেশে এখন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বাকি তিনটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হলো রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেটে। খুলনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হবে দেশের পঞ্চম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। উত্থাপনের পর বিলটি যাচাই-বাছাই করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পাঠানো হয়।
বিলটি যাচাই-বাছাই করে ২৬ জানুয়ারি সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেন।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি হবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। সমাবর্তন বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান যেখানে রাষ্ট্রপতি থাকার কথা, সেখানে যদি তিনি থাকতে না পারেন তবে তিনি যাকে নির্বাচন করে দেবেন, তিনি সেখানে প্রধান হিসেবে থাকবেন।
বিলে এই প্রথম দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈতিককতা কমিটি রাখা হয়েছে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলে খুলনা অঞ্চলের মধ্যে যত মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট বা চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য যেসব ইনস্টিটিউট আছে, সবই খুলনা শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশে চিকিৎসা শাস্ত্রের মানোন্নয়নে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা এবং আধুনিক জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।
২০১৯ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিলালিত খুলনায় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
পরে জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা এবং খুলনায় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়।
সর্বশেষ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য খুলনা শহরের পাশে ১০০ একর জমির সংস্থান আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, খুলনা ২০২০’ এর নীতিগত অনুমোদন হয়।
রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল সেসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই রকম আইন করা হয়েছে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে।