বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নয় তলা টিএসসির প্রস্তাব, বিকল্প খুঁজছে ঢাবি

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২৮

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নয় তলা ভবনের নকশা দিয়েছে গণপূর্ত ও স্থাপত্য অধিদপ্তর। বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও সময় নিতে চায়। বর্তমান ভবনকে রেখেই কিছু করা যায় কি না সে বিষয়ে সুপারিশ করতে গঠন করা হয়েছে কমিটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসি ভেঙে নয় তলা ভবন করতে চায় গণপূর্ত অধিদপ্তর। সরকারি এই সংস্থা ও স্থাপত্য অধিদপ্তর একটি নকশা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত না জানিয়ে দুটি বিকল্প নিয়ে সুপারিশ করতে যাচ্ছে।

গণপূর্ত ও স্থাপত্য অধিদপ্তর চাইছে বর্তমান ভবনটি ভেঙে ফেলতে। তবে বর্তমান ভবনটি রেখে কিছু করা যায় কি না-সেটিও ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট ভবনের কনফারেন্স রুমে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পিডব্লিউডির প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের দুইজনসহ একটি দলের বৈঠক হয়।

সেখানে টিএসসিকে ভেঙে নতুনভাবে গড়ার খসড়া নকশা উপস্থাপন করে পিডব্লিউডির প্রকৌশলী দল। তাতে কিছুটা পরিবর্তন করে নতুন নকশা প্রণয়নে পিডব্লিউডিকে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে সভায় অংশ নেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম সিকদার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কামাল সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকালের মিটিংয়ে পিডব্লিউডির খসড়া প্ল্যান অনুযায়ী টিএসসির বর্তমান স্থাপনার সবকিছু ভেঙে নতুন করে করার কথাই বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু সুপারিশ ছিল।

‘যদিও প্রধানমন্ত্রী নিজে পুরো ব্যাপারটি তত্ত্বাবধায়ন করছেন। তবুও আমরা চাই বর্তমান স্থাপনার সুবিধাগুলো রেখে যাতে সংস্কারের কাজ করা হয়।’

পিডব্লিউডির নকশায় নতুন টিএসসির ভবনটি কেমন ছিল – এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘তারা নয় তলা টিএসসি ভবনের প্ল্যান নিয়ে এসেছিল। তবে সেই নকশায় আমাদের পর্যবেক্ষণ থাকায় তারা আমাদেরকে সুপারিশগুলো ফাইনাল করে জমা দেয়ার কথা বলেছেন। সেটার প্রেক্ষিতে ১৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে পিডব্লিউডির আরেকটি বৈঠকের কথা রয়েছে।’

পিডব্লিউডি ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের প্রধান প্রদীপ কুমার বোস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাথে সেই মিটিংয়ে গিয়েছিলাম। তারা একটা খসড়া প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খসড়া নকশার ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দেয়ায় আমরা সেইগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি।

‘বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দুইটি আলাদা সুপারিশ করেছে। সেইগুলোকে মাথায় রেখেই স্থাপত্য অধিদপ্তর কাজ শুরু করেছে। তারা দুইটি নকশাই আলাদা আলাদা করে তৈরি করে আবার ১৯ জানুয়ারি আমরা মিটিং করব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সেখানে যা চূড়ান্ত হবে সেইটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে। তিনি চূড়ান্ত করে দিলে আমরা কাজ শুরু করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সুপারিশগুলো নথিভুক্ত করার কাজটি করছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম মাহবুব মুস্তাফা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দুই ধরনের সুপারিশ তৈরির কাজ করছি। একটি পরিকল্পনা দিব যেখানে এখনকার স্থাপনা গুলো রেখে নতুন সংস্কারের কথা বলা হবে। আরেকটিতে সবকিছু যদি ভাঙা হয় সেক্ষেত্রে টিএসসিতে কী কী সুবিধা থাকা প্রয়োজন সেটির পরিকল্পনা দেয়া হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘আগামী দুই একদিনের মধ্যেই মাননীয় উপাচার্যের স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনা আমরা পিডব্লিউডিকে জমা দেবো। আমাদের দুইটি প্রস্তাবনাতেই টিএসসির সবুজায়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটি ভালো মনে করবেন সেটি চূড়ান্ত হবে।’

টিএসসির উপদেষ্টা সৌমিত্র শেখরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এই মিটিংয়ের ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমিও গণমাধ্যম থেকে এই খবর পেয়েছি।’

এর আগে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসি ভেঙে নতুন রূপে গড়ার যে উদ্যোগ, তা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘প্রত্যাশা, মতামত ও সুপারিশ’ জানতে চেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গত ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় টিএসসির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও সুপারিশ যেন দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২ জানুয়ারির মধ্যে https://forms.gle/GnfMKXKS1NBVZGND7 এই ওয়েবলিংকে গিয়ে মতামত দেয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ক সুপারিশ জানানো যাবে।

ষাটের দশকে নির্মিত টিএসসির দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটির নকশা করেছিলেন গ্রিক স্থপতি কনস্ট্যান্টিন ডক্সিয়াডেস। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের আমলে ভবনটির নির্মাণ শেষ হয়।

এই স্থপতি টিএসসির পাশাপাশি ঢাকায় হোম ইকোনমিকস কলেজ, কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমিসহ কিছু স্থাপনার নকশা করেছেন। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের নকশা তৈরি করা হয় তার নেতৃত্বেই।

গত ২ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবনটিকে তিনি আধুনিক ভবন হিসেবে দেখতে চান।

৩০ সেপ্টেম্বর এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের স্বপক্ষে তার যুক্তি তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী ও উপাচায়ের ওই বক্তব্যের পর টিএসসি ভবন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। তবে শিক্ষক শিক্ষকদের একটি অংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করছেন।

এ বিভাগের আরো খবর