বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হল বন্ধ, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে কীভাবে

  •    
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:২১

আবাসিক হল বন্ধ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে। কোথায় থাকবেন তারা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায়। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও একই অবস্থা।

আবাসিক হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাসায় অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আলি। এখন মহামারির মধ্যে তাকে স্নাতক পরীক্ষা দিতে হবে।

২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত।

ইয়াসিনের ঢাকায় তেমন আত্মীয়-স্বজন নেই। মহামারি করোনায় অন্য বন্ধুর বাসায় অবস্থান করাও সম্ভব নয়। তাকে থাকতে হবে আবাসিক হোটেলে। সেই সামর্থ্য নেই তার পরিবারের।

ইয়াসিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হল বন্ধ থাকলে কোনোভাবেই পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছে দাবি জানাব অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার। না হলে আবাসিক হল খুলে দেয়া হোক।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সুমন বিশ্বাস অবস্থান করছেন গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর রাজৈরে। কয়েকদিন অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছেন। যদিও ইন্টারনেটের সমস্যার থাকার কারণে পুরোপুরি ক্লাস করতে পারেননি। তার পক্ষেও ঢাকায় থেকে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না।

এই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী জাকির হোসেন রাজু প্রায় নয় মাস কুমিল্লায় নিজ গ্রামে আছে। তিনি বলেন, ‘নেট সমস্যায় ক্লাস করতে পারি নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক প্রকার বাধ্য করে আবাসিক হল বন্ধ রেখে হঠাৎ পরীক্ষার নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা বার বার বিভাগীয় প্রশাসনকে অপারগতার কথা জানিয়েছি। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

আবাসিক হল বন্ধ থাকায় পরীক্ষা দেয়ার অনিশ্চয়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থী। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও একই অবস্থা। শিক্ষার্থীদের নিজেদের আবাসনের ব্যবস্থা করে পরীক্ষা হলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।

রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়া অনুমতি দিয়েছে। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি সদস্যরা যুক্ত ছিলেন। সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন সেমিস্টারের পরীক্ষাও নেয়া যাবে বলে জানানো হয়। তবে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে ইউজিসি।

এর আগেই মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সেশনজট মোকাবিলায় আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে হলে থাকার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না’ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা ইন্সটিটিউটগুলোকে তাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরীক্ষায় উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য বলা হয়েছে।

এ ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরুর আগে আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেটা ইউজিসির। এ ব্যাপারে আমার মন্তব্য নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। তবে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভাগ তাদের সুবিধা অনুযায়ী সব পরীক্ষা নেবে।’

শিক্ষার্থীদের হল খোলার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে দেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। কোনো সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানতে পারবেন।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল খোলা রেখে পরীক্ষা নেয়ার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা সেটা গ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুতই একটি মিটিং করে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করবে।’

একই কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।

এ বিভাগের আরো খবর