করোনা মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় বিশ্বে কমপক্ষে ৩২ কোটি শিশু নভেম্বরের শুরু থেকে স্কুলে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। এই অবস্থা চললে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থাটি।
ইউনিসেফের গ্লোবাল এডুকেশন চিফ রবার্ট জেনকিনস নিউ ইয়র্কে এক বিবৃতিতে জানান, বিশ্বজুড়ে জরিপ চালিয়ে তারা দেখতে পেয়েছেন, নভেম্বর মাসে প্রতি পাঁচ জনের একজন করোনার কারণে স্কুলে যেতে পারেনি।
স্কুল বন্ধের কারণে শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও সতর্ক করেছে ইউনিসেফ।
'যথেষ্ট কারণ' ছাড়াই করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে বলেও জানায় ইউনিসেফ।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটির শিক্ষা বিষয়ক প্রধান। রবার্ট জেনকিনস বলেন, ‘সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত একেবারেই ভুল।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে বাধ্য হয়ে যদি স্কুল বন্ধও রাখতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রান্তিক অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’
এদিকে, মহামারিতেও বিশ্বজুড়ে স্কুল খোলা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির ইউনিসেফ শাখার প্রেস কর্মকর্তা ক্রিস্টিন কাহমান। তিনি বলেন, ‘জোর করে স্কুল বন্ধ রাখার কারণে সংকটে পড়েছে বিশ্ব শিক্ষা।’
ক্লাসরুম সংক্রমণমুক্ত ধরে নিয়ে জার্মানিতে লকডাউনের মধ্যে স্কুল খোলা রাখা হয়েছিল। তবে নভেম্বরে তিন লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়।
জার্মানির পাশের দেশ ফ্রান্সে লকডাউন কঠোর থাকলেও খোলা রয়েছে স্কুল। ইউনিফেসের গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারি বিস্তারে স্কুলের খুব একটা ভূমিকা নেই। ছোটদের চেয়ে বড়দের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
ক্রিস্টিন কাহমান বলেন, ‘বিশ্বজড়ে স্কুল বন্ধ রাখার ফলে শিক্ষা সংকট ছাড়াও সামনের কয়েক দশকে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে প্রান্তিক শিশুরা।’
শিশুরা দীর্ঘদিন স্কুলের বাইরে থাকায় তাদের স্কুলে ফেরার আগ্রহ কমে যাবে বলেও মনে করেন ক্রিস্টিন।