বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাসাইনমেন্ট: টাকা না পেয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে

  •    
  • ২৭ নভেম্বর, ২০২০ ১০:৪৭

সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে অ্যাসাইনমেন্টে টাকা নেয়া যাবে না। কিন্তু গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের কিশামত তাজপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে খাতা আর লুজ শিটের নামে নেয়া হচ্ছে টাকা। এক ছাত্র দাবি করা টাকার অর্ধেক দিতে চাইলে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।

গাইবান্ধায় স্কুলে অ্যাসাইনমেন্টের জন্য কৌশলে টাকা আদায় চলছে। খাতা বা অতিরিক্ত পাতা (লুজ শিট) এর জন্য আদায় করা হচ্ছে টাকা। আর দাবি করা টাকার অর্ধেক দিতে চাওয়ায় এক ছাত্রকে পিটুনির ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ফিরোজ মিয়া নামে এক অভিভাবক।

স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে শিক্ষার্থী মূল্যায়নে এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর দেশের নানা প্রান্তেই টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

এর মধ্যে সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, কোনোভাবেই টাকা নেয়া যাবে না। কেউ টাকা নিলে তা ফেরত দিতে হবে।

কিন্তু গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার কিশামত তাজপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই আদেশের পরোয়া করছে না। সেখানে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হচ্ছে স্কুলের নির্ধারিত খাতায়। আর তা বাজার দরের দ্বিগুণ। সেই খাতা আবার ছোট, ফলে কেউ আরও কাগজ চাইলে সেখানেও দিতে হচ্ছে টাকা।

সরকার জানিয়েছে অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গে পাস ফেলের কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ সেই স্কুলে বলা হচ্ছে, টাকা না দিলে আটকে দেয়া হবে অটোপাস।

এই স্কুলের দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে গেলে তাদেরকে ৩০ টাকা করে দিতে হয়। খাতার নামে এই টাকা নেয়া হয়। অথচ সেই খাতা পাশের দোকানে মেলে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। লুজ শিটের জন্যও আদায় করা হচ্ছে সমপরিমাণ টাকা।

থানায় করা অভিযোগে বলা হয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নিচ্ছিলেন সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান। তিনি ইংরেজি পড়ান।

এ সময় ফরিদপুর ইউনিয়নের সাবেক তাজপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে নাহিদ মিয়া লুজ শিট চাইলে ৩০ টাকা দাবি করেন মিজানুর রহমান। নাহিদ ১৫ টাকা দিতে চাইলে তাকে লুজ শিট দেয়া হয়নি। বরং চাহিদামত টাকা না পেয়ে নাহিদকে বকাবকি শুরু করেন শিক্ষক।

হঠাৎ লাঠি হাতে আরেক সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ওই কক্ষে ঢুকে নাহিদকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন।

ঘটনার পর সহপাঠী ও স্থানীয়দের সহায়তায় নাহিদকে উদ্ধার করে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

শরীর ছাড়াও নাহিদের হাতের কনুই, ঘাড় ও আঙ্গুলে আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

নাহিদ মিয়া বলে, 'স্যার (মিজানুর রহমান) অ্যাসাইনমেন্টের টাকার জন্য বকাবকি ও খারাপ ভাষায় কথা বলেন। আমি বলি, অ্যাসাইনমেন্টের জন্য ৩০ টাকা নিচ্ছেন; লুজ শিটেও (অতিরিক্ত পৃষ্ঠা) টাকা নিচ্ছেন। অর্ধেক দামে বা এমনিতে তো দেন না স্যার। লুজ শিটও কিনে নিতে হয়। এ কথা বলতেই আরেক স্যার (শহিদুল ইসলাম) বেদম পেটায়।'

তবে অ্যাসাইনমেন্টের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান। তাদের দাবি, শ্রেণিকক্ষে নাহিদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশৃঙ্খলা করায় বেত দিয়ে একটি আঘাত করা হয় নাহিদকে।

‘বিষয়টি স্থানীয়ভাবে অপোষ-মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও রাজি হয়নি নাহিদের পরিবার। বরং আমাদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করছেন নাহিদের পরিবার’-দাবি ওই শিক্ষকের।

তবে নাহিদের বাবা ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘অ্যাসাইনমেন্টের টাকা কম দিতে চাওয়াই আমার ছেলের অপরাধ।’

সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাসেল আহমেদ জানান, আঘাতের কারণে হাতের আঙ্গুল ফুলে গেছে নাহিদের। তাকে এক্স-রে করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়েছে।

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তে থানার এক সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর