করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা স্কুল-কলেজ কবে খোলা হবে, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
বুধবার বিকালে ঢাকায় শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম’-বিইআরএফ এর আয়োজনে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনার মধ্যে পুরোপুরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলতে পারব, এ বিষয়ে এখনও কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু ১৪ তারিখে সরকার ঘোষিত ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তার আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা স্কুল কলেজ সব শেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা।
ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে গত ২৯ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৪ নভেম্বরের পর সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে কি না, তা পরিস্থিতি পর্যালোচনার ওপর নির্ভর করবে।
এই কয় মাসে সরকার শিক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন শিক্ষক আর টেলিভিশন ক্লাসের ওপর নির্ভর করেছে। তবে বিইআরএফ দেশের শহরাঞ্চলে চালানো জরিপের ভিত্তিতে জানিয়েছে, ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কোনো মাধ্যমেই শিক্ষা পায়নি।
কেবল শহর অঞ্চলে, যেখানে টেলিভিশনের সংখ্যা, শিক্ষা নিয়ে পারিবারিক সচেতনতাও বেশি বলে ধারণা করা হয়, সেখানেই ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ১১ জন শিক্ষার্থী সংসদ টিভির ক্লাস দেখে।
এই বাস্তবতায় সব শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনতে হলে স্কুলে নিয়ে আসার বিকল্প নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১৪ নভেম্বরে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে। এই তারিখের পর সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কি না এ বিষয়ে নিয়ে কাজ করছি। আগামীকাল এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
প্রতিষ্ঠানটির জরিপের ফলাফল সারা দেশের ওপর প্রযোজ্য নাও হতে পারে বলে মনে করেন দীপু মনি। বলেন, ‘এটা সারা দেশের চিত্র বা শহর অঞ্চলের চিত্র বলা ঠিক হবে না। বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রম করে আসছে। করোনা মধ্যে সবকিছুতেই সংকট ছিল। কিছু সীমাবদ্ধতা আমাদের রয়েছে এটা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি।’
করোনা শেষে শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পাল্টে দেয়ার ইঙ্গিতও দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় অতিমাত্রায় পরীক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও বাড়তি চাপে থাকে। জিপিএ ফাইভ এর মোহে দৌড়াতে গিয়ে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক চাপ বাড়ছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসছে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
এ জন্য পাঠ্যবইয়ে বড় পরিবর্তন আনা হতে পারে বলেও জানান দীপু মনি।
করোনার মধ্যেই সাত শর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
এর মধ্যে একটি হলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে।
তবে এখনও কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পরীক্ষার তারিখ দেয়নি।