জামালপুরের সরিষাবাড়ীর প্রত্যন্ত গ্রাম হাসড়া মাজালিয়ায় বাস আসাদের। পুরো নাম শেখ আতিফ আসাদ।
মা-বাবা আর সাত ভাই-বোনের দুঃখ-কষ্টের সংসারে বেড়ে ওঠা।
আসাদ উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছেন জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে।
পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকার সময় শুরু করেন ধানকাটা, দিনমজুরি, রং বার্নিশ, রাজমিস্ত্রি, রডমিস্ত্রিসহ বিভিন্ন কাজ।
পাঠাগারে আসা নতুন বইয়ের সঙ্গে আসাদের সেলফি
অভাবের কারণে স্কুলে যেতে পারেননি নিয়মিত। তবু সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে তোলেন 'মিলন স্মৃতি পাঠাগার'।
২০১৮ সালে প্রতিবেশী এক আপুর দেওয়া ২০টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু তার এই পাঠাগারের।
নিজের ঘরের বারান্দায় পাটকাঠির বেড়া দিয়ে পাঠাগার শুরু করেন আসাদ। বই সংরক্ষণে বাবার পরামর্শে ঘরে থাকা কাঠ দিয়ে তৈরি করেন একটা নড়বড়ে বুকশেলফ।
মানুষের কাছ থেকে চেয়ে দু'একটা করে বই নিয়ে বইয়ের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করেন আসাদ। পাঠকের হাতে তুলে দেন নতুন বই।
বাবা-মায়ের সঙ্গে আসাদ
পাঠাগারের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে আসাদ নিউজবাংলাকে বলেন, 'এখন প্রায় দুই হাজার বই আছে পাঠাগারে। দ্রুত বাড়ছে বইয়ের সংখ্যা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই বই পাঠাচ্ছেন।
আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দিয়ে আসি সপ্তাহে দু'তিন দিন। এ ছাড়া কেউ কেউ ১০-১৫ কিলোমিটার দূর থেকেও ফোন দেন। সাইকেল চালিয়ে তাদেরও বই দিয়ে আসি। বর্তমানে প্রায় ১০০ পাঠক আছে আমার পাঠাগারের।'
নিজ উপজেলা সরিষাবাড়ীতে ২০২০ সালের ১৭, ১৮, ১৯ জানুয়ারি তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করেন আসাদ।
দেশের অনেক গুণী মানুষ তার বইমেলায় অতিথি হয়েছিলেন। এতে তার ইচ্ছেশক্তি এবং আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অনেক গুণ।
তার বিশ্বাস, এই বইমেলা হবে প্রতি বছর।