গাইবান্ধা থেকে বাংলাবান্ধা। ৪০৪ কিলোমিটারের পথ। হেঁটে এই পথ পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহেল রানা সোহান।
জনসাধারণের মাঝে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরতে তার এই পদক্ষেপ। পাশাপাশি অটিজম, বাল্যবিয়ে, শিশুদের শারীরিক-মানসিক ও অবহেলাজনিত নির্যাতনের কুফল নিয়েও প্রচার চালান সোহান।
১৫ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টায় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়ন থেকে হেঁটে একাই যাত্রা শুরু করেন সোহান। সারাদিন হেঁটে ৬০.৮৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে উলিপুরে গিয়ে শেষ করেন প্রথম দিনের হাঁটা।
দ্বিতীয় দিন প্রায় ৬৭.২৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে উলিপুর থেকে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট হয়ে রংপুরের কাউনিয়ায় গিয়ে পৌঁছান।
তৃতীয় দিন কাউনিয়া, সাতমাথা, রংপুর ও বদরগঞ্জের মোট ৪৮.৪৩ কিলোমিটার পথ হাঁটেন সোহান।
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের সামনে সোহান
চতুর্থ দিন শুরু হয় দিনাজপুর জেলায়। এ জেলার পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর সদর ও বীরগঞ্জের মোট ৬৮.৮৬ কিলোমিটার পথ হাঁটেন তিনি।
পঞ্চম দিন খানসামা উপজেলা হয়ে ঢুকেন নীলফামারী জেলায়। পাড়ি দেন সৈয়দপুর, নীলফামারী সদর ও নীলসাগরসহ ৬৫.৪৫ কিলোমিটার পথ।
ষষ্ঠ দিনে পা রাখেন ঠাকুরগাঁও জেলায়। পাড়ি দেন ঠাকুরগাঁও, বোদা, পঞ্চগড়, জগদলের ৫০.৪৫ কিলোমিটার পথ।
সপ্তম দিনে পঞ্চগড়ের জগদল থেকে ৪৩.৮৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে সোহান তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।
এই ৪০৪ কিলোমিটার হাঁটা পথে সোহান ২০০-এর বেশি গাছ লাগান। পাশাপাশি ৫০ জন এতিম শিশু ও ৩০ জন বৃদ্ধের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেন।
সোহান বলেন, ' এই প্রজেক্টে সাত দিনে আমার ব্যক্তিগত খরচ হয়েছে মাত্র ৪৯২ টাকা। এই হাঁটা আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় ট্রাভেলার ও মাউন্টেনার বাবর আলী ভাইকে উৎসর্গ করছি। যিনি হেঁটে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন।
সাত দিনে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার ৪০৪ কিলোমিটার পথ হেঁটেছি। এর জন্য চার মাস শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছি। দীর্ঘদিন লং ডিস্টেন্স সাইক্লিংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকায় মানসিকভাবে এমনিতেই কিছুটা এগিয়ে ছিলাম। পরিবেশ রক্ষায় এমন একটি কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। সামনে হেঁটে বিশ্ব ভ্রমণে বের হতে চাই। ’
আমরাও তার প্রতি এই বিশ্বাস রাখতে চাই যে, সোহান হেঁটে একদিন জয় করবেন পৃথিবী। উড়াবেন মানবিতকার পতাকা।