বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বেবিচকের অসাধারণ সাফল্য: যুক্তরাজ্যের DfT মূল্যায়নে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর উচ্চ স্কোর অর্জন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৩০

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (DfT, UK) কর্তৃক পরিচালিত বিমানবন্দর মূল্যায়নে এক অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা (HSIA) সামগ্রিক মূল্যায়নে ৯৩% এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে ১০০% নম্বর অর্জন করেছে। একইভাবে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট (OIA) সামগ্রিকভাবে ৯৪% এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে ১০০% নম্বর পেয়েছে। ডিএফটি মূল্যায়ন দল বেবিচক এর প্রস্তুতি ও কার্যক্রমে গভীরভাবে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

DfT Airport Assessment হলো যুক্তরাজ্য সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মূল্যায়ন ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বিদেশী বিমানবন্দরসমূহে যাত্রী ও কার্গো নিরাপত্তা মানদণ্ড যাচাই করা হয় এবং যুক্তরাজ্যের চাওয়া অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলোর বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করা হয়। এই পরিদর্শনসমূহ পরিচালনা করেন DfT এর অনুমোদিত ইন্সপেক্টর ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা, যারা সরেজমিনে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নীতিমালা পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ব্যবস্থাসমূহ যাচাই করেন। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমানবন্দর মূল্যায়ন কার্যক্রম ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে, অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো যাচাইয়ের জন্য ডিএফটি পরিদর্শক দল নিয়মিতভাবে এ মূল্যায়ন অব্যাহত রাখে।

ডিএফটি থেকে প্রাপ্ত ভাল মূল্যায়ন জাতীয় স্বার্থে গভীর তাৎপর্য বহন করে। এটি বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃঢ়তা ও সক্ষমতার প্রতিফলন, যা সামগ্রিকভাবে জাতীয় নিরাপত্তার উন্নয়নে সহায়তা করে। এই ফলাফল বিদেশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও এয়ারলাইন্সগুলিকে আশ্বস্ত করে যে যাত্রী ও কার্গো ব্যবস্থাপনা টেকসই এবং উচ্চমানের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রয়েছে। ২০১৬ সালে কার্গো স্ক্রিনিং নিয়ে উদ্বেগের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য সরাসরি ঢাকাগামী কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ফলে, বাংলাদেশের সব রপ্তানি কার্গোকে তৃতীয় দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রেরণ করতে হতো, যা রপ্তানিকারকদের জন্য বিলম্ব ও অতিরিক্ত খরচ সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে, বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের বিধিনিষেধের সঙ্গে নিজেদের সামঞ্জস্য গড়ে তোলে। ২০১৭ সাল থেকে Explosive Detection System (EDS) এর মতো আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম যোগ করা হয় এবং Explosive Detection Dog (EDD) ইউনিটকে রপ্তানি কার্গো স্ক্রিনিং ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের কার্গো অপারেশনে একটি মাইলফলক অর্জন। বেবিচক ধারাবাহিকভাবে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ এবং প্রক্রিয়াগুলোর উন্নয়ন করে এসেছে, যাতে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছেছে। এই ভালো মূল্যায়ন ভবিষ্যতে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঝুঁকি কমাবে এবং অন্য দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিং করার প্রয়োজন হ্রাস করবে। এটি বাণিজ্য সহায়ক হবে, বিদেশি এয়ারলাইন ও হ্যান্ডলার অংশীদারিত্বকে আকৃষ্ট করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে, যা সরাসরি জাতীয় অর্থনীতি ও উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বিমানবন্দর মূল্যায়নে এই অসাধারণ সাফল্য বেবিচকের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা, বিমান নিরাপত্তা বিভাগের দৃঢ় নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং উভয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যকর নিরাপত্তা বাস্তবায়নের ফল। সকলের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা ধারাবাহিক উন্নতির প্রতি তাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এই সাফল্যের ভিত্তিতে, বেবিচক ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বেবিচকের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, বাংলাদেশ শুধু বর্তমান অর্জন বজায় রাখবে না, বরং বৈশ্বিক বিমান নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান অর্জন করে বিশ্বের অন্যতম উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ বিভাগের আরো খবর