বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খেলাপি ঋণ নবায়নের নতুন সুবিধা ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়াবে: মুডিস

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:১১

খেলাপি ঋণ নবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া সুবিধাকে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঋণের জন্য নেতিবাচক হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের নীতির কারণে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। সোমবার মুডিসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জানি করে। সেখানে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পাবে। এ ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১০ বছর। ঋণ নিয়মিত হলে শুরুতে ঋণ পরিশোধে দুই বছর বিরতি সুবিধা পাওয়া যাবে।মুডিস মনে করছে, দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড থাকলে ঋণগ্রহীতার প্রকৃত পরিশোধক্ষমতা যাচাইয়ে দেরি হবে। ফলে খেলাপি ঋণের হার কৃত্রিমভাবে কম মনে হতে পারে। সম্পদমানের ঝুঁকিও আড়াল হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের উদ্ধৃতি দিয়ে মুডিস বলেছে, পুনঃ তফসিলের পর ৯০ দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এতে পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বাধা তৈরি হতে পারে এবং ঋণগ্রহীতা আবার খেলাপি হলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়বে।মুডিস আরও বলেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়মকানুন শিথিল হওয়ার কারণে ব্যাংক খাতে ঋণ পুনঃ তফসিলের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল, কিন্তু ঋণ পুনরুদ্ধার হয়নি।তবে মুডিস মনে করে, এই শিথিল নীতির কারণে প্রকৃত অর্থে ঋণ পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে অনাদায়ি ঋণের ‘চিরায়ত সমস্যা’ দীর্ঘায়িত হবে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ঋণ পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ার যথাযথ তদারকি না হলে দুর্বল ঋণ কাগজে-কলমে সচল দেখানো হতে পারে। এতে বাস্তবে ঝুঁকি থেকে যাবে।মুডিসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের অনাদায়ি ঋণের হার ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে হয় ২৪ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর মূলধন-ঝুঁকি অনুপাত নেমে এসেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশে; এটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে। অনাদায়ী ঋণের বিপরীতে সংরক্ষণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে।মুডিস বলেছে, তারা যে তিনটি ব্যাংকের ঋণমান নির্ধারণ করেছে, ওই তিনটি ব্যাংকের অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আছে। ব্যাংক তিনটি হলো ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক।মুডিস বলেছে, ঋণগ্রহীতাদের চাপ কমানো ও খেলাপি ঋণ কমাতে ন্যূনতম সুদের হার থেকে কম সুদে ঋণ দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। ফলে ঋণগ্রহীতার আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়বে এবং খেলাপির ক্ষেত্রে ঋণদাতাদের ক্ষতিও তুলনামূলক কম হবে, যা উভয় পক্ষের জন্যই উপকারী। তবে মাত্র ২ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধের সীমা ঝুঁকি তৈরি করবে।১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিদ্যমান খেলাপি ঋণের স্থিতির ওপর কমপক্ষে ২ শতাংশ নগদে অর্থ জমা দিতে হবে। তাতে ঋণ নিয়মিত হলে দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (ঋণ পরিশোধে বিরতি) তা পরিশোধে ১০ বছর সময় পাওয়া যাবে। তবে এর আগে ঋণ তিন বা তার চেয়ে বেশিবার পুনঃতফসিল করা হলে অতিরিক্ত ১ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে। তবে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের নির্ধারিত ঋণ পরিশোধের সূচি অনুযায়ী তিনটি মাসিক কিস্তি বা একটি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, আগে যেসব অর্থ জমা দেওয়া হয়েছে, তা ২ শতাংশ হিসেবে গণ্য হবে না। নতুন করে ২ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার পর তা নগদায়ন হলে ছয় মাসের মধ্যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে হবে।প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতার ক্ষতির পরিমাণ ও প্রতিষ্ঠানের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এই সুবিধা দেওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের সোলেনামার মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চলমান মামলার কার্যক্রম স্থগিতের ব্যবস্থা নিতে হবে।দেশে গত জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। দেশে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন লাখ কোটি টাকার বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর