দেশের ৪৯টি শীর্ষস্থানীয় ও আস্থাভাজন ব্র্যান্ডকে সম্মাননা জানিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ ২০২৫–২৬ এর গালা আয়োজন। সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই দ্বিবার্ষিক আয়োজনে দেশের কর্পোরেট অঙ্গনের শীর্ষ নির্বাহী, ব্যবসায়িক প্রতিনিধি ও শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত মর্যাদাপূর্ণ এই সম্মাননাটি প্রদান করা হয়। এ সময় সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশে ২০২৫-২৬ শীর্ষক প্রকাশনাটির প্রচ্ছদও উন্মোচন করা হয়।
সুপারব্র্যান্ডস ১৯৯৪ সালে যুক্তরাজ্যে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বাধীন ব্র্যান্ড মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান। একটি ব্র্যান্ড তখনই সুপারব্র্যান্ড হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে যখন ব্র্যান্ডটি বিশেষত খাতে সর্বোচ্চ সুনাম অর্জন করে এবং ভোক্তাদের কাছে আলাদা আস্থা তৈরি করে। সুপারব্র্যান্ডস মর্যাদা বাজারে একটি ব্র্যান্ডের অবস্থান শক্তিশালী করে এবং নেতৃত্বের স্বীকৃতি নিশ্চিত করে।
সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ ২০২৫–২৬ নির্বাচনের কাজ করেছে একটি বিশেষত ব্র্যান্ড কাউন্সিল। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত এই কাউন্সিল প্রতিটি ব্র্যান্ডকে ২০ নম্বরের স্কেলে মূল্যায়ন করেছে। মানদণ্ড ছিল—ব্র্যান্ডের ঐতিহ্য, ক্যাটেগরি প্রাসঙ্গিকতা, গুণগত মান, কার্যকারিতা সম্পর্কে ভোক্তার আস্থা, এবং ভোক্তার মনে উপস্থিতি (টপ অব মাইন্ড এওয়্যারনেস)। সর্বোচ্চ স্কোর পাওয়া ব্র্যান্ডগুলোই সুপারব্র্যান্ডস মর্যাদা অর্জন করেছে।
গালা অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশনস কোম্পানি বাংলাদেশ (প্রা:) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ বিন তাজ নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন: “বাংলাদেশে সুপারব্র্যান্ডস নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত কঠোর মানদণ্ড মেনে সম্পন্ন হয়েছে। একাধিক ধাপে মূল্যায়নের মাধ্যমে কেবল সেইসব ব্র্যান্ডকেই নির্বাচন করা হয়েছে, যারা ধারাবাহিকতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতায় নিজেদের আলাদাভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। তারাই শেষ পর্যন্ত সুপারব্র্যান্ডস মর্যাদা অর্জন করেছে।”
স্বাগত বক্তব্যে সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন “সুপারব্র্যান্ড হলো এমন একটি স্বীকৃতি যেটির প্রতি মানুষ আস্থা রাখে, শ্রদ্ধা করে এবং গর্ব অনুভব করে। এই ব্র্যান্ডগুলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে আস্থা অর্জন করেছে এবং মূল্যবোধের মাধ্যমে নিজেদের আলাদা করেছে। আজকের এই আয়োজনে আমরা সেইসব ব্র্যান্ডকে সম্মান জানাচ্ছি, যারা এই আস্থা অর্জন করেছে এবং শিল্পে নতুন মানদণ্ড তৈরি করছে।”
আসন্ন সুপারব্র্যান্ডস বইতে প্রতিটি স্বীকৃত ব্র্যান্ডের ইতিহাস, যাত্রা ও বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হবে। বইটি বিজ্ঞাপন, বিপণন, ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও গণমাধ্যমের পেশাজীবীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স।
বিশ্বব্যাপী ১৯৯৪ সাল থেকে সুপারব্র্যান্ডস ৯০টি দেশে প্রায় ৪৫,২২১টি ব্র্যান্ডকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ৬৪৫টিরও বেশি বই প্রকাশ করেছে। এযাবতকালীন ৫টি আয়োজনে বাংলাদেশেও সুপারব্র্যান্ডস এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যেখানে এমন ব্র্যান্ডগুলোকে সম্মান জানানো হয় যারা আস্থা, গুণমান ও স্বকীয়তার প্রতীক।