চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকি রপ্তানির পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ জেলা থেকে ৩ হাজার ১২৬ টন শুঁটকি রপ্তানি হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭০ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ আয় প্রায় ৫ লাখ ডলার বেশি।
বাংলাদেশ মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম থেকেই দেশের সর্বাধিক শুঁটকি বিদেশে যায়। মূল গন্তব্য ভারত, বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলো। এছাড়া হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও থাইল্যান্ডেও শুঁটকির চাহিদা রয়েছে।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফারহানা লাভলী বলেন, ‘চট্টগ্রামের শুঁটকির বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ছে। তবে বর্তমান রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট নয়। সঠিক উদ্যোগ নিলে এ খাত থেকে আরও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’
চট্টগ্রামের ১৭টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত শুঁটকি রপ্তানি করে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশীয় বাজারে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে পর্যাপ্ত রপ্তানি করা যাচ্ছে না। তারা সরকারি প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।
শুঁটকি রপ্তানিকারক শোয়েব ট্রেডের স্বত্বাধিকারী সুজন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ চালান ভারত গেছে। মিঠাপানির পুঁটির শুঁটকির চাহিদা সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি। এছাড়া সামান্য পরিমাণে মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যেও রপ্তানি করা হয়।’
বিডিসি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফারুক জানান, ‘শুঁটকির রপ্তানি প্রতি বছর বাড়ছে। তবে কাঁচা মাছের দাম বেশি থাকায় শুঁটকির দামও বাড়ছে।’
বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রানা বলেন, ‘বিদেশে বাঙালি সম্প্রদায় যেখানে আছে, সেখানেই দেশীয় শুঁটকির চাহিদা প্রবল। এ জন্য রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা দেওয়া জরুরি।’
এদিকে চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ বাজার থেকেই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ শুঁটকি রপ্তানি হয়। এখান থেকে আস্ত শুঁটকির পাশাপাশি মাছের বিভিন্ন অংশ- লেজ, পাখনা ও অন্ত্র- বিদেশে পাঠানো হয়।
আসাদগঞ্জ শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান হায়দার বলেন, ‘গুণগত মানের কারণে বাংলাদেশের শুঁটকি বিদেশে জনপ্রিয়। তবে দেশে মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দামও বেড়েছে। দাম স্থিতিশীল হলে রপ্তানিও আরও বাড়বে।’