দেশের উত্তরবঙ্গসহ ২২টি জেলার প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘যমুনা বহুমুখী’ সেতুর টোল আদায় ও পরিচালনা কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হয়েছে। এতে প্রাক্কলিত মূল্য থেকে সরকারের ১৫ কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার ১১৭ টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দরপত্র আহ্বানের পর সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছে ‘চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন কোম্পানী’ (সিআরবিসি)। প্রতিষ্ঠানটি আগামী পাঁচ বছর যমুনা সেতুর টোল আদায় ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে। আর সে সুবাদে প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে ২০ দশমিক ২১ শতাংশ অর্থাৎ ১৫ কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার ১১৭ টাকা সাশ্রয় হবে সরকারের।
চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিন থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে সিআরবিসি। প্রথম দিনেই যানবাহন দ্রুত পারাপার করার জন্য ফাস্ট ট্র্যাকের একটি বুথ থেকে বাড়িয়ে সাতটি বুথে উন্নীত করে নতুন পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আলতাফ হোসেন সেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সূত্রে জানা গেছে, ৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার ৬২১ টাকা ১৫ পয়সা প্রাক্কলিত ব্যয়ের দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরবিসি-কে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫০৪ দশমিক ১৪ টাকা মূল্যে কার্যাদেশ দেয়া হয়।
সেতু কর্তৃপক্ষের যমুনা সেতুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হলেও যমুনা সেতুর টোল আদায় কমানোর কোনো সুযোগ নেই। সরকারের নির্ধারিত হারেই টোল আদায় করতে হবে। ডিজিটাল সফটওয়্যারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ইতোমধ্যে কার্যাদেশ পেয়ে নতুন কোম্পানি টোল আদায় শুরু করেছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে সিআরবিসি।
তিনি জানান, ‘এখানে প্রতিটি লাইনে অনলাইনে টোল দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা থাকবে। ব্যবহারকারী যদি টোল কালেকশন সিস্টেমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে তাহলে পারাপারের সময় তারা অনলাইনে টোল দিতে পারবে। সরাসরি টোল ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে। এতে টোলে কোনো জ্যাম হবে না।
বিবিএ ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যমুনা সেতুর টোল আদায় ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিল। দীর্ঘ ছয় বছর পর বিদেশি কোনো নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ দায়িত্ব দিল সরকার।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করা হয়। শুরুর দিন থেকেই সেতুতে যানবাহন পারাপারে টোল আদায় করা হচ্ছে।