দেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে কয়েকটি পক্ষ। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাভার, গাজীপুরসহ বেশকিছু এলাকায় কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এমন সময়ে পোশাকশিল্পের নিরাপত্তায় সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে আজ সোমবার রাত থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্পাঞ্চল পুলিশের যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।
গত কয়েকদিন ধরেই নানা ইস্যুতে কারখানাগুলো অস্থির করার চেষ্টা করছে কয়েকটি রাজনৈতিক পক্ষ। শ্রমিকদের নানা ইস্যুতে উস্কানি দিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাভার ও আশুলিয়ায় কয়েকটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরীহ শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বন্ধ পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে রোববার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে শোনা যায় নরসিংদী এবং নারায়ণগঞ্জের পোশাক শিল্প এলাকাতেও। কোথাও কোথাও কারখানাগুলোতে বহিরাগতদের প্রবেশের খবরও পাওয়া গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খলায় জড়িত বহিরাগতদের আজ সোমবার রাতের মধ্যে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। পাশাপাশি মঙ্গলবার থেকে সব কারখানা চালু করতে মালিকদের অনুরোধ করেন তিনি। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘আমরা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে শ্রম উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। শ্রম উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, ‘শ্রমিকদের যৌক্তিক কোনো দাবি থাকলে তা মেনে নেয়া হবে। তবে কোনো পক্ষ যদি অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এই আন্দোলনের পেছনে নেতৃত্ব দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন যে যারা এর সঙ্গে জড়িত এবং অন্যায়ভাবে আন্দোলনকে উস্কে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। আজ থেকেই পুলিশ ও যৌথবাহিনী শিল্পাঞ্চল এলাকায় মোতায়েন করা হবে। তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।’