ইসলামী ব্যাংকের পর এবার ইসলামী ধারার আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন পর্ষদও ভেঙে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্য দিয়ে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলো আরও একটি ব্যাংক।
এস আলম গ্রুপের তৈরি করা পরিচালনা বোর্ড ভেঙে নতুন করে একজন পরিচালক ও চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটির সাধারণ কর্মীদের করা দাবিও বাস্তবায়ন হলো।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক আদেশে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে পুনর্গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আদেশে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক-এসআইবিএল-এর পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। আদেশে আরও বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠনের জন্য পাঁচজনকে পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নতুন পরিচালক করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত মেজর. মো. রেজাউল হককে। তিনি ব্যাংকটির একজন উদ্যোক্তা শেয়ারধারী।
নতুন স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম, রূপালী ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোরশেদ আলম খন্দকার এবং হিসাববিদ মো. আনোয়ার হোসেন।
জানা গেছে, নতুন পরিচালকদের মধ্য থেকে ব্যাংকটির জন্য নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্বিতীয় ব্যাংক হিসেবে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এস আলমমুক্ত হলো। এর আগে দেশের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্কের ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককেও এস আলমমুক্ত করা হয়। সেখানেও আগের বোর্ড ভেঙে নতুন পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন বেলাল আহমেদ, যিনি এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের জামাতা। চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে এসআইবিএলের মালিকানায় আসে। মালিকানা পরিবর্তনের সময় বাদ দেয়া হয় কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করে নেয়া হয়। সে কারণে ব্যাংকটি ইতোমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবেও ঘাটতিতে রয়েছে।