বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন দিনে ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন উধাও

  •    
  • ৩০ জুলাই, ২০২৪ ২০:৩৬

রোববার সকালে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পাঁচ হাজার ৪১৩ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু করে। তবে তিনদিনের পতনে মঙ্গলবার তা নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ টানা তিনদিনে সূচক কমেছে ১৪৪ পয়েন্ট। এই সময়ে লেনদেন হয়েছে যথাক্রমে রোববার চারশ ৮৮ কোটি, সোমবার চারশ ৫০ কোটি ও মঙ্গলবার চারশ ৩২ কোটি টাকা।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট অশান্ত পরিস্থিতিতে টালমাটাল দেশের পুঁজিবাজার। সহিংসতা, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু, সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জেরে পুরো দেশের অর্থনীতির মতো ভালো নেই পুঁজিবাজারগুলোও।

আন্দোলন শুরুর পর অর্থাৎ জুলাইয়ের ১৫ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময়ে সাত কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে ছয় কর্মদিবসেই সূচকের পতন হয়েছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কর্মদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন খোয়া গেছে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা।

শিক্ষার্থীদের ডাকা আন্দোলনে দেশজুড়ে সহিংসতা বন্ধে শেষ পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিস টানা পাঁচদিন বন্ধ রাখা হয়। মোবাইল কিংবা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় প্রায় দশদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য করা সম্ভব হয়নি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ভালো থাকার কথা নয় পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি। তবে দেশের পুঁজিবাজার ভালো নেই দীর্ঘ সময় ধরেই। একের পর এক ইস্যুতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখা যায় সূচক ও লেনদেনে।

কারফিউ আংশিক শিথিল করার পর ধীরে ধীরে শুরু হতে থাকে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। খুলে দেয়া হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও শেয়ারবাজার। পুঁজিবাজার চালু হওয়ার দ্বিতীয় দিন অবশ্য ইতিবাচক দেখা যায় সূচক ও লেনদেন।

অনেক বিনিয়োগকারীর মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করেছে। পুঁজিবাজারেও গতি আসবে।

অবশ্য চলতি সপ্তাহের তিন কর্মদিবসে সেই আশা আবার নিরাশায় রূপ নেয়। এই সময়ে গতি ফিরে আসার কোনো লক্ষণ তো নেই-ই, বরং দুশ্চিন্তায় শেয়ার বিক্রির দিকে ছুটছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনেক বিনিয়োগকারী। তিনদিনে বিক্রির চাপে প্রতিদিন সূচক কমেছে। সে সঙ্গে লেনদেন ও বাজার মূলধন কমে যাওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের।

রোববার সকালে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পাঁচ হাজার ৪১৩ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু করে। তবে তিনদিনের পতনে মঙ্গলবার তা নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ টানা তিনদিনে সূচক কমেছে ১৪৪ পয়েন্ট। এই সময়ে লেনদেন হয়েছে যথাক্রমে রোববার চারশ ৮৮ কোটি, সোমবার চারশ ৫০ কোটি ও মঙ্গলবার চারশ ৩২ কোটি টাকা।

ঢাকার মতিঝিলের একটি ব্রোকারেজ হাউজের একজন ট্রেডার জানান, গত কয়েক দিনে তার কাছে যতগুলো ফোনকল এসেছে তার মধ্যে প্রায় সবই শেয়ার বিক্রি করার উদ্দেশ্যে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সশরীরে বিনিয়োগকারীরা আমাদের হাউজে আসছেন না বললেই চলে। তারা ঘরে বসে লেনদেন করতে চান। তবে সিংহভাগ বিনিয়োগকারীর ফোনকলে বিক্রির অর্ডার পাওয়া আমার কাছে আশ্চর্যের।’

এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাজারে সাধারণত শেয়ার কেনা ও বেঁচা দুটোই আমরা করি, সবসময় দেখি কেউ বিক্রি করে আবার কেউ কোন শেয়ার কিনতে ফোন দেন, এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

এর মধ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেখা যায় বহু শেয়ারের ক্রেতা নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী শেয়ারের দাম একদিনে কমতে পারবে তিন শতাংশ। ফলে বেশিরভাগ শেয়ারের ক্ষেত্রেই তিন শতাংশ কমে হল্টেড হতে দেখা যায়। দিনশেষে ডিএসইতে ৩৪০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমতে দেখা যায়। বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ২৫টির আর অপরিবর্তিত ছিলো ৩২টি কোম্পানির শেয়ার দর।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী মোস্তফার মতে, বর্তমান পরিস্থিতির পুরোপুরি উত্তরণ না হলে বাজার ভালো হওয়ার সুযোগ কম। সংকটের এই সময়ে কে শেয়ার কিনবে?

‘একে তো মানুষের হাতে টাকা নেই, তার ওপর চারদিকে হত্যা-সংঘর্ষ লেগেই আছে। আবার দেশজুড়ে চলছে কারফিউ, আংশিক বন্ধ ইন্টারনেট। এমন অবস্থায় যার কাছে টাকা আছে সেও কোথাও বিনিয়োগ করবে না এটা আমি নিশ্চিত।’

তাহলে কবে নাগাদ পুঁজিবাজার স্বাভাবিক হতে পারে- এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘আগে দেশ স্বাভাবিক হোক, তারপর পুঁজিবাজার হবে।’

এদিকে বুধবার থেকে আগের মতোই স্বাভাবিক সময়ে চলবে দেশের অফিস-আদালত ও ব্যাংক। সবকিছুর সঙ্গে মিল রেখে আগের মতোই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে স্বাভাবিক লেনদেন সময়ে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি কতটুকু স্বাভাবিক হবে সেই প্রশ্নই তুলছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা।

এ বিভাগের আরো খবর