বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দুই হাজার কোটি ডলার

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪ ১৮:৩৮

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, বিদায়ী অর্থবছরে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ৭৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য। বিপরীতে এ সময়ে আমদানি হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে বর্তমান ব্যাংক রেট হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ ধরে টালমাটাল হতে শুরু করে বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতি। বাংলাদেশের জন্যও সে সময়টা ছিলো বেশ সংকটময়। একদিকে ডলারের সংকট অন্যদিকে আমদানির চাপ, সব মিলে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।

কঠিন সেই সময়ে বিলাসি পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শুধু তাই নয়, ব্যাংকগুলোকে আমদানি ঋণপত্র বা এলসি খোলার ক্ষেত্রেও দেয়া হয় নানা নির্দেশনা। ফলে এলসি খোলা আর আমদানির ক্ষেত্রে অভিযোগ লেগেই ছিল।

তবে এতকিছুর পরও শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে বড় অংকের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। অর্থাৎ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেড়ে ব্যালেন্স অফ পেমেন্টে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, গত অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানিতে এই বাণিজ্য ঘাটতি ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ৭৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য। বিপরীতে এ সময়ে আমদানি হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা বিধিনিষেধের পরও এই সময়ে আমদানি বেশি হয়েছে দুই হাজার ২২ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান ব্যাংক রেট হিসাব করলে তা প্রায় ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এর আগের বছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরের ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার কম হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, জুলাই-মে সময়ে সামগ্রিক লেনদেনের ঋণাত্মক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮৮ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৮৮০ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সামগ্রিক লেনদেন ঘাটতি বেড়ে যাওয়া মানেই হলো দেশে যে পরিমাণ বৈদিশিক মুদ্রা আসছে, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিশোধ ঝুঁকি এড়াতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। ফলে এটি রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট ঠিক রাখা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। এজন্য বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার পরামর্শ দেন তিনি।

‘বাণিজ্য ঘাটতি যে কোনো মূল্যে কমিয়ে আনতে হবে। কাজটি সহজ নয়, তবে করতে হবে। রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে পারলে কাজটি সহজ হবে।’ যোগ করেন ড. মনসুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এক হাজার ২৬৯ কোটি ডলার বা ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ছিলো ১ হাজার ৩৫৮ কোটি বা ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়র ডলার। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি করতে হয় ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

সব মিলে তিন অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে মোট ৩৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে মোট রিজার্ভ রয়েছে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের ফর্মুলা অনুযায়ী দেশে রিজার্ভ রয়েছে ২১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।

এ বিভাগের আরো খবর