বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোরবানির চামড়ার দাম নিয়ে এবারও হতাশা!

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২৪ ২১:৫০

নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের চামড়ার দাম হওয়ার কথা এক হাজার ৩৭৫ থেকে দেড় হাজার টাকা। লবণ, মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিলেও চামড়ার দাম দাঁড়ায় ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা। অথচ পোস্তার আড়তগুলোয় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। সায়েন্সল্যাব মোড় কিংবা হাজারীবাগে দাম আরও কম, ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

বছরের সবচেয়ে বেশি চামড়া সংগ্রহের মৌসুমে এবারও কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি বিক্রেতারা। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ঢের কম দামেই চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে মাদ্রাসা, মৌসুমি ব্যবসায়ী ও অন্যান্য খাতের চামড়ার মালিকদের।

কোরবানির ঈদের তৃতীয় দিন বুধবারও কিছু চামড়া বেচা-বিক্রি চোখে পড়েছে পুরান ঢাকার পোস্তাসহ কয়েকটি জায়গায়।

কাঁচা চামড়ার পাইকারি বাজারখ্যাত লালবাগের পোস্তার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চামড়া কেনায় এবার তাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা পূরণ হয়েছে। ঈদের দিন সন্ধ্যা ও পরদিন বেশিরভাগ চামড়া কেনার কাজটি সেরেছেন তারা। বুধবার চলে তা সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজ।

তবে এবারও গরমসহ নানা কারণে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, পোস্তায় এ বছর ঈদের ১ লাখের ওপরে চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানকার পুরোনো ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ বছর আগের বছরের তুলনায় ব্যবসায়ীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে তারপরও তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চামড়া সংগ্রহ করেছেন তারা। সেখানকার একজন ব্যবসায়ী জানান, ঈদের দিন বিকাল ৫টার পর থেকে চামড়া কেনা শুরু করেন তারা। সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহ হয়। এখন পর্যন্ত যা চলমান। কেন চামড়ার দাম এবারও কম জানতে চাইলে একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এবার গরমের কারণে অনেকে চামড়া কিনতে ভয় পাচ্ছে।’

ট্যানারি মালিকরা চাহিদা অনুযায়ী তাদের অর্থ সরবরাহ করেননি বলেও জানান তিনি।

ঈদের আগে একাধিক বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এবার ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয় ৫৫-৬০ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা।

ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫০-৫৫ টাকা, যা এর আগের বছর ছিল ৪৫-৪৮ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০-২৫ টাকা বর্গফুট ও বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়।

নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের চামড়ার দাম হওয়ার কথা এক হাজার ৩৭৫ থেকে দেড় হাজার টাকা। সেখানে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাদ দিলেও চামড়ার দাম দাঁড়ায় ১১শ থেকে ১২শ টাকায়। তবে ঈদ ও পরদিন পোস্তার আড়তগুলোয় বড় ও মাঝারি আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। সাইন্সল্যাব মোড় কিংবা হাজারীবাগে চামড়া বিক্রি হয়েছে আরও কম দামে, ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, ‘পোস্তায় এ মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার চামড়া কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এখনো কোথাও চামড়া অবিক্রিত থাকলে আমাদের ব্যবসায়ীরা তা কিনবেন। তবে চামড়াটা সঠিক উপায়ে সংগ্রহ করতে হবে। সময়মতো লবণ না দিলে সেই চামড়া কেউ কিনবে না।’

চামড়ার দাম কম কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আফতাব খান বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে। তবে কেউ যখন লবণ না দিয়ে চামড়া নিয়ে আসবে তখন প্রতি বর্গফুটে ৫ থেকে ৭ টাকা কম হতেই পারে।’

ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর বিপুলসংখ্যক কোরবানির গরু গুটি পক্সে আক্রান্ত থাকায় চামড়া নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়াও সঠিকভাবে মাংস ছাড়াতে না পারা, সময়মতো লবণ না দেয়া আর অতিরিক্ত গরমের কারণে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আলম নামের এক ব্যবসায়ী জানান, কয়েক হাজার চামড়া কিনেছে তার আড়ত। তবে সংরক্ষণ আর সঠিক সময়ে ট্যানারিতে পাঠানো নিয়ে এখনও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

চামড়া ব্যবসায়ীরা আরও জানান, গরম থেকে চামড়া বাঁচাতে চাইলে জবাই করার ৫ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যে লবণ দেয়া প্রয়োজন। তা করতে না পারলে দ্রুত এনে তাদের কাছে বিক্রি করে দেয়ার পরামর্শ দেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।

চামড়া জাতীয় সম্পদ উল্লেখ করে তারা বলেন, এটা নষ্ট হোক তা কারও জন্যই প্রত্যাশিত নয়। এ ছাড়া অনেক গরুর খামারে এখন মোটাতাজা করার জন্য গরুকে নানা ধরনের কেমিক্যাল মেশানো খাবার খাওয়ানো হয়। এর ফলে চামড়া দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর