বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আর্থিক অভিজাতদের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: সিপিডি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৩ মে, ২০২৪ ২২:৪৬

নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘দেশের ব্যাংকিং খাতে ভঙ্গুরতা দেখা দিয়েছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতার ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ইচ্ছায় নয়, বরং বাইরের চাপে স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত।’

বেসরকারি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাত সুশাসন ও জবাবদিহিতার সংকটে ভুগছে। আর আর্থিক অভিজাতদের সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ‘বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য সামনে কী আছে?’ শীর্ষক এক সংলাপে মূল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি

ফাহমিদা বলেন, ‘দেশের আর্থিক খাত ব্যাংকের ওপর নির্ভর করে। দেশের উন্নয়নে এই খাতের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই ব্যাংকিং খাতে ভঙ্গুরতা দেখা দিয়েছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতার ক্ষতি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঋণ অনুমোদন, পুনঃতফসিলীকরণ, রিট-অফ, ফোরক্লোজার সবকিছুই ব্যাংকে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ইচ্ছায় নয়, বরং বাইরের চাপে স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যখন ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়, তখন তার ওপর নির্ভর করে নীতিগত পদক্ষেপ নেয়াটা ভুল হবে। আর্থিক খাতের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সঠিক সময়ে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাংবাদিকদের জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহকে কঠিন করে গণমাধ্যমের প্রবেশকে সীমাবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের সুশাসন পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে, যখন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে।

‘তারা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) নিজেরাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি বিভাগের অধীনস্ত এবং তারা স্বাধীন নয়। এ অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। আর সেই কমিশনের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা থাকা উচিত এবং ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা উচিত।’

সংলাপে উপস্থাপিত একটি গবেষণাপত্রে সিপিডি তুলে ধরেছে যে, দেশে খেলাপি ঋণের (এনপিএল) মোট পরিমাণ গত দশ বছরে তিন গুণেরও বেশি হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ ছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। ২০২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের অবস্থা একই।

তবে বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ভালো কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইসলামী ব্যাংকে ধীরে ধীরে তারল্য সংকট দেখা দিচ্ছে। ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য ছিল ৩৯ শতাংশ। তবে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে পরিচালনার নেতৃত্ব পরিবর্তনের পর ব্যাংকটির ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তারল্য ২৫ শতাংশে নেমে আসে।

সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতকে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে দেখেছি যে ব্যাংকিং খাতের লাভের বেসরকারিকরণ এবং লোকসান জাতীয়করণ হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ বিভাগের আরো খবর