উচ্চ সুদ হারের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকায় মূল্যস্ফীতির প্রভাবে হিমশিম খাচ্ছেন রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা।
গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বেড়েছে মাছ, ডিম, শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে ডিমের বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা। ডজনে দাম বেড়েছে ২৫ টাকা।
শাকসবজি, মাংস, মুরগি ও মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও চড়া দাম রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন পেশার একাধিক ক্রেতা।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, প্রায় সব ধরনের শাকসবজি, মাছ, মুরগি, মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে।
একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৮৪ থেকে ১১৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ভোক্তদের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি জ্বালানির দামও বেড়েছে, বেড়েছে সুদ হার। এসবের প্রভাব পড়েছে ভোক্তা বাজারে।
আবুল হোসেনের মতো একই কথা জানালেন আরও অনেকে।
গত ১০ দিন ধরে ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। শুক্রবার রাজধানীতে প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সে হিসাবে গত দুই সপ্তাহে দাম বেড়েছে ২৫ টাকা।
কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, মালিবাগসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগি ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সোনালি মুরগির দাম গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩৫ টাকায়। সোনালি মুরগি আকার ও মান ভেদে কেজিপ্রতি ৩৪৫ থেকে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতি কেজি কক মুরগি ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ও দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৭০ থেকে ৭৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, মুরগির খাবার ও ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
শুক্রবার মান ভেদে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়, যা সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে কেজিতে ৩০ টাকা বেশি।
মান ভেদে খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকায়। সে হিসাবে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজার মাছের বাজারে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ টাকা এবং এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায়।
রুই ও কার্প জাতীয় মাছ কেজি হিসেবে ও মান অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। নদীর ছোট মাছসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় সবজির দাম এখনও চড়াই রয়েছে। অন্যদিকে দাম বাড়ার জন্য মূল্যস্ফীতিকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার প্রতি কেজি বেগুন, ঢেঁড়স, সজনে, শিম, করলাসহ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি।
অন্যদিকে মৌসুম শেষ হওয়ায় বেড়েছে টমেটোর দাম। ভালো মানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।
অন্যান্য সবজি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং লাউ, চালকুমড়া ও ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল, গম, আটা, দুধ, সয়াবিন, সুগন্ধি চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।