আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদন পেলেই ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাবে বাংলাদেশ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই অনুমোদন মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দাতা সংস্থাটির সফররত প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউ।
তিনি জানান, তৃতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়করণে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। এখন আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দাতা সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় পর্যালোচনা শেষে ৯৩২ মিলিয়ন ডলারের কিস্তি ছাড় দেয়া হবে।
ক্রিস পাপাগেওর্জিউ বলেন, ‘আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির আওতায় গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য ফর্মুলাভিত্তিক জ্বালানি মূল্য সমন্বয় নীতি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
‘মূল্যস্ফীতিসহ নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিনিময় হার পুনর্বিন্যাসে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলোকে স্বাগত জানায় আইএমএফ।’
আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট মাইক্রো ইকোনমিকস ডিভিশনের এই প্রধান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় স্থিতিস্থাপকতা আনতে পারলে সামষ্টিক অর্থনীতি ও রাজস্ব ঝুঁকি হ্রাসে তা সহায়ক হবে।
‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার বর্তমান চেষ্টা ও ব্যয় দক্ষতা বাড়াতে পারলে তা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়ক হবে। এতে ব্যক্তিমালিকানাধীনসহ বিভিন্ন খাত থেকে জলবায়ু অর্থায়ন মিলবে।’
অর্থপাচার নিয়ে আইএমএফ কথা না বললেও শুল্ক অব্যাহতির বিরুদ্ধে কথা বলে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে অর্থপাচার নিয়ন্ত্রণ করা। যেসব কর্মসূচিতে ট্যাক্স বাড়ে সেগুলোকে সমর্থন করা আমাদের লক্ষ্য। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে কাজ করছি। আমরা সুশাসন শক্তিশালী করার কথা বলি। এই সুসাশনের মধ্যেই অর্থপাচার সমস্যার সমাধান রয়েছে।’
মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এরপর কর বাড়ালে মানুষের সেই কষ্ট আরও বাড়বে কি না- এমন প্রশ্নে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রমের একটি বড় অংশ হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো। কাজেই আমাদের নীতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর কী প্রভাব ফেলে তা নিয়ে আমরা সতর্ক।’