পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত। শনিবার দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়।
প্রতিবেশী দেশটিতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্র রাজ্যে। চলমান লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। তার দুদিন আগে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিল সরকার।
ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া খবর অনুসারে, পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে। ডিজিএফটি প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (এমইপি) নির্ধারণ করেছে ৫৫০ ডলার।
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারত সরকার চলতি ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখে।
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রায় ৫ মাস পর ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশসহ আরও পাঁচটি দেশকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
এরপর গত মাসে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষি ও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে রপ্তানির অনুমতি দিলে অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিতে পারে উল্লেখ করে সরকার এতোদিন ওই দাবিতে সায় দেয়নি।
এদিকে চলমান লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে মহারাষ্ট্রের ১১টি আসনে ভোট হবে ৭ মে মঙ্গলবার। এর ঠিক দুদিন আগে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হল।
নির্বাচনের পরবর্তী ধাপে ক্ষমতাসীন বিজেপি মহারাষ্ট্রে বাড়তি সুবিধা পেতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে।
দেশের বাজারে দাম কমার প্রত্যাশা
বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম রোজার ঈদের পর থেকেই বাড়তির দিকে। এর মধ্যেই ভারত সরকারের কাছ থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা এল।
বাংলাদেশের বাজারে কয়েকদিন ধরেই খুচরায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৬০ টাকা কেজি দরে। তবে শুক্রবার ক্রেতাদের কাছে দাম চাওয়া হচ্ছিল ৭০ টাকা কেজি। সে হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে দশ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি। শুক্রবার দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা কেজি।
ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় সোমবারই দেশে আমদানি করা পেঁয়াজ আসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর তাতে করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানির জন্য আমরা আগে থেকেই আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছিলাম। ঋণপত্র খুলে রেখেছিলাম ডিসেম্বরেই। সেগুলোর মেয়াদ এখনও বহাল আছে। সেই আইপি দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আনতে সর্বোচ্চ দুদিন সময় লাগবে।’