খুচরা পর্যায়ে কোনো বিক্রেতা এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকার বেশি দামে বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে রোববার সাংবাদিকদের সামনে ব্যবসায়ীদের এমন হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গত ২ মার্চ বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে এক অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৬৩ এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা দরে বিক্রি হবে।
রমজানের আগে বাজারে পণ্যের সরবরাহ নিয়ে মন্ত্রী আজ বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো ঘাটতি আল্লাহর অশেষ রহমতে এখন পর্যন্ত নাই। আর গত প্রায় দেড় মাসে আমরা কিন্তু চালের বাজারে একটা অস্থিরতা ছিল, সেটা কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে একটা স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) পর্যায়ে আছে। চালের দাম নিয়ে কিন্তু আপনাদেরও কোনো কমপ্লেইন (অভিযোগ) নাই।’
সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেলের দাম আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি ১৬৩ টাকা করে। আমাদের আজকে থেকে বাজারের সুপারভিশন (তদারকি) আমরা রমজান উপলক্ষে আরও বাড়াব, যাতে কেউ ১৬৩ টাকার ওপরে বোতল পার লিটার ১৬৩ টাকা এবং ১৪৯ টাকা লুজ (খোলা) তেলের। এর বাইরে যেন কেউ বিক্রি না করে।
‘সে ব্যাপারে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব এবং কোনোভাবেই জানি এটার ব্যত্যয় না হয়, এটা আমরা চেষ্টা করব আরকি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু নির্দেশ দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও কিন্তু নির্দেশ দিয়েছে যে, বাজারের এই সাপ্লাই চেইনে (সরবরাহ ব্যবস্থায়) কেউ যদি ব্যাঘাত ঘটায়, তাহলে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে সুফল আসছে উল্লেখ করে টিটু বলেন, ‘সো আমরা পদক্ষেপগুলো নিচ্ছি এবং একেবারে যে ইমপ্রুভ (উন্নতি) হয় নাই, তা না। আমরা কিন্তু ইন্ডিয়া থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য অলরেডি তাদের সম্মতি আমরা পেয়েছি। দুই-এক দিনের মধ্যে পেঁয়াজও ইনশাল্লাহ বাংলাদেশে ঢুকবে।’
আগামীতে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয়া হবে জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সো আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং আপনাদের মাধ্যমে আমি সকল ব্যবসায়ী মহলকে বলব, আমি ইউএইতে দেখলাম যে, ১৮টি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তারা একেবারে রাষ্ট্রীয় সার্কুলার দিয়েছে যে, এই পণ্যগুলির কেউ দাম এই মাসে বাড়াতে পারবে না। তো আমরা ইনশাল্লাহ এবার হয়তো পারি নাই।
‘আমাদের সাপ্লাই চেইনগুলা আমরা ইমপ্রুভ করে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ ইমপ্রুভ করে আগামীতেও আমরা ক্যাবিনেটের (মন্ত্রিসভার) অনুমোদন নিয়ে এই যে এসেনশিয়াল প্রোডাক্ট (নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য), এই প্রোডাক্টগুলির একটা কমপ্লিট লিস্ট (সম্পূর্ণ তালিকা) তৈরি করে আমরা ওইভাবে এটার সাপ্লাই বাড়ানো এবং পণ্যের নির্ধারিত দাম, আমরা ঠিক করতে পারি।’
চেইন শপগুলোতে পণ্যের দাম অপেক্ষাকৃত কম উল্লেখ করে নিজের অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আনফরচুনেটলি (দুর্ভাগ্যবশত) যখন কাঁচাবাজারে গেলাম, তখন দেখা গেল যে, প্রত্যেকটা জিনিসেরই দাম দুই-তিন টাকা ওই দামের (সুপার মার্কেটের দামের) চেয়ে বেশি। সো একেবারে রিটেইল পর্যায়ে কাঁচাবাজারগুলি অস্থায়ীভাবে থাকে। সো ওইগুলা আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব, এটা এখন থেকে আমাদের বের করতে হবে।’
বাজারে তদারকি বাড়ানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল একটাই। সরবরাহটাকে নিশ্চিত করা। কোনোভাবেই জানি সরবরাহ ঘাটতি না হয়। তো আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছি এবং বাজার মনিটরিং ইনশাল্লাহ আমরা বাড়াব।
‘ওই ছোট ছোট পাড়ার বাজারগুলি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, আমরা সেটা সুপারভিশনের মাধ্যমে হোক এবং ফুড ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে হোক, এটা আমরা চেষ্টা করব।’