বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রপ্তানিতে নগদ সহায়তা প্রত্যাহারে সংশোধনী, ফের নতুন বাজারভুক্ত তিন দেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২০:৩০

বাংলাদেশ ব্যাংক ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমানোর ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে প্রচলিত বাজারের আওতাভুক্ত করা হয়েছিল। এছাড়া যেসব পোশাক পণ্যকে নগদ সহায়তা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল, নতুন সার্কুলারে তা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

নতুন রপ্তানি বাজার হিসেবে আবারও অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। একইসঙ্গে নগদ সহায়তা প্রত্যাহারের পূর্বঘোষিত সার্কুলারে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়েছে। সে অনুযায়ী এসব বাজারে রপ্তানিতে ৩ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সোমবার নতুন এক সার্কুলারে এই সংশোধনীর কথা জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এর আগে ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমানোর ঘোষণা দেয়। তাতে আলোচিত এই তিনটি রপ্তানি গন্তব্যকে প্রচলিত বাজারের আওতাভুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে রপ্তানিতে মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে ওই নির্দেশনার দুই সপ্তাহ পার না হতেই নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো। তবে সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে ওই তারিখ পেছানো হয়েছে। বলা হয়েছে, এটি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।

এছাড়া ৩০ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনে যেসব পোশাক পণ্যকে নগদ সহায়তা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল, নতুন সার্কুলারে তা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

৫ এইচএস কোডের পোশাক রপ্তানিতে আর নগদ সহায়তা দেয়া হবে না বলে আগে জানানো হয়।

এসব পণ্যের মধ্যে আছে, পুরুষ ও বাচ্চা ছেলেদের জন্য নিট বা ক্রশেট শার্ট, টি-শার্ট, ভেস্ট, জার্সি, পুলওভার, কার্ডিগান, জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, স্যুট ও সমজাতীয় পণ্য। পণ্যগুলোর এইচএস কোডগুলো হলো- ৬১০৫, ৬১০৭, ৬১০৯, ৬১১০ এবং ৬২০৩।

পোশাক প্রস্তত ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ-র দেয়া তথ্যমতে, এই পাঁচটি হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডভুক্ত আইটেম ২৫.৯৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনে ভূমিকা রেখেছে, যা গত অর্থবছরে হওয়া মোট রপ্তানির ৪৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির মধ্যে যা ছিল ৫৫ দশমিক ২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণ হওয়ার কথা রয়েছে। এই লক্ষ্যে, পর্যায়ক্রমে সব ধরনের রপ্তানি পণ্যে প্রণোদনা কমানোর একটি কৌশলগত পরিকল্পনা ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়।

তবে এই উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন রপ্তানিকারকরা।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান নতুন বাজারের ক্যাটাগরি থেকে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানকে বাদ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সেসময় বলেন, ‘আমরা এই তিনটি দেশে খুব কষ্ট করে মার্কেট ডেভলপ করেছিলাম। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত আমাদের পুরো শিল্পকে ব্যাপক ঝুঁকির মুখে ফেলবে।’

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের সিদ্ধান্তকে তখন ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন বিশ্লেষকরা। তাদের যুক্তি, করদাতাদের টাকা রপ্তানি খাতে প্রণোদনা হিসেবে দেয়ার সুফলটা দিনশেষে পশ্চিমা ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও তাদের ভোক্তারাই পায়। কেননা পশ্চিমা ব্র্যান্ড ও বায়াররা প্রণোদনার হিসাব করেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এলডিসি গ্রাজুয়েশন নীতির আলোকে, কয়েক বছর ধরেই পর্যায়ক্রমে রপ্তানিতে প্রণোদনা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়ে আসছে। আর রপ্তানিকারকরা এখন সুবিধাজনক এক্সচেঞ্জ রেট সুবিধা পাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের নগদ সহায়তার প্রয়োজন নেই।’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানও ধাপে ধাপে রপ্তানি প্রণোদনা প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা রপ্তানিকারকদের শুধু প্রণোদনার মাধ্যমেই সহায়তা করি না। আরও অনেক জায়গা রয়েছে। সেসব জায়গায় অসুবিধাগুলো কমিয়ে আনতে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

‘আমাদের অধিকাংশ রপ্তানিকারককে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের অসুবিধা পোহাতে হয়। চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনার খরচ বেড়ে যায়। আমলাতান্ত্রিক সমস্যাও আছে। এসব জায়গায় সরকার কাজ করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর