বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাঘের শীতে সবজির বাজারে উত্তাপ: কী বলছেন বিক্রেতারা

  •    
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ১০:৫৮

শীত প্রায় শেষের দিকে হলেও খুচরা বাজারে এখনও কেজিতে ষাটের ঘরেই অধিকাংশ সবজি। এর কারণ হিসেবে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, স্বাভাবিকের চেয়ে সবজির উৎপাদন কম এবার। তা ছাড়া স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত সবজিও বাজারে এসেছে দেরিতে।

শীত মৌসুম শুরু হতেই বাংলাদেশের বাজারে আসে নানা সবজি। শীতকালীন এসব সবজির দামও থাকে ক্রেতাদের হাতের নাগালে।

বলা হয়ে থাকে, ‘মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে’। সেই বাঘ কাঁপানো মাঘের শীত চলছে এখন দেশে।

এমন শীতে প্রতিবারের মতো এবারও কাঁচাবাজারে হরেক রকম সবজি নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা, তবে দাম কম থাকার সেই রীতি অনেকটাই বদলে গেছে এবার।

শীত প্রায় শেষের দিকে হলেও খুচরা বাজারে এখনও কেজিতে ষাটের ঘরেই অধিকাংশ সবজি। এর কারণ হিসেবে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, স্বাভাবিকের চেয়ে সবজির উৎপাদন কম এবার। তা ছাড়া স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত সবজিও বাজারে এসেছে দেরিতে।

তারা জানান, পাইকারি বাজারে অধিকাংশ সবজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পরিবহন ও সংরক্ষণ খরচ যোগ হয়ে খুচরা বাজারে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার চট্টগ্রামে পাইকারি সবজি বিক্রির সবচেয়ে বড় বাজার রিয়াজুদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাঁধাকপি, মুলা, ধনে পাতা, খিরা, পেঁয়াজ পাতা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ৩৫ টাকায়। লাউ, ফুলকপি, কাঁচামরিচ, শসা, পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া শিম, টমেটো, বেগুন, চিচিঙ্গা ও বরবটি বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। ব্রোকলি ও লেটুস পাতা বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৭০ টাকায়।

দেশি আলু আকারভেদে ৪৫ থেকে ৭০ টাকা, ক্যাপসিকাম জাতভেদে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ৪৩০ টাকা এবং খোসাসহ শিমের বিচি ১১০ থেকে ১৪০ টাকা ও খোসা ছাড়া ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।

খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে ক্রেতাদের হাতে পৌঁছাতে কয়েক ধাপে বাড়তি খরচ গুনতে হয় তাদের। এতে ব্যয় পুষিয়ে মুনাফার জন্য খুচরা বাজারে প্রতিটি সবজির মূল্য পাইকারির চেয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে হয়।

রিয়াজুদ্দিন বাজারে পাইকারি সবজি কিনতে আসা চকবাজার কাঁচাবাজারের বিক্রেতা জসীম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি শীতে সবগুলো সবজির পাইকারি দাম থাকত ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে, কিন্তু এবার দাম অনেক বেশি। এখানে সরু গলি হওয়ায় বড় গাড়ি ঢোকানো যায় না। তাই শ্রমিক দিয়ে এনে মূল সড়কে গাড়ি রেখে লোড করতে হয়।

‘এর বাইরে পরিবহন আর সংরক্ষণ খরচও আছে। সব মিলিয়ে আমাদের গড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়তি খরচ হয়ে যায়। তাই খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’

পাইকারি বাজারে সবজির বাড়তি দামের কারণ হিসেবে আড়তদাররা বলছেন, হেমন্তে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক সবজি মাঠেই নষ্ট হয়ে যায়। এতে এবার উৎপাদন হয় তুলনামূলক কম। এর প্রভাবই পড়ে বাজারে।

রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও মেসার্স ময়নামতি ট্রেডার্সের মালিক রশীদ আহমেদ বলেন, ‘শীতের আগে বৃষ্টি হয়েছিল এদিকে। এই বৃষ্টিতে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই উৎপাদন অনেক কম এবার।

‘বাজারে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি থাকলে দাম কম থাকে। এখন যেহেতু উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশি, তাই দামও একটু বেশি।’

উৎপাদন কম হওয়ার পাশাপাশি এবার চট্টগ্রামের স্থানীয় কৃষকদের সবজি দেরিতে বাজারে আসছে বলে জানান ‘নিউ দয়াল ভাণ্ডার’ নামের আড়তের মালিক হারুনর রশীদ। তার ভাষ্য, ‘উৎপাদন তো স্বাভাবিকের চেয়ে কমই, তবে এবার বন্যাসহ নানা কারণে স্থানীয় কৃষকরা সবজি ফলিয়েছেন অনেকটা দেরিতে। তাই শীত প্রায় শেষের দিকে হলেও এখনও স্থানীয় কৃষকদের সবজি পুরোদমে বাজারে আসেনি। এখন আসতেছে ধীরে ধীরে।’

শীতের একেবারে শেষ দিকে স্থানীয় কৃষকদের সবজি বাজারে এলে দাম আরও কমতে পারে বলে দাবি রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেরাজ বাণিজ্যালয়ের মালিক ফারুক শিবলীর। তিনি বলেন, ‘এখন সরাবরাহ কম। উত্তর চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের কৃষকদের সবজি মাত্র আসা শুরু হয়েছে। তাদের সবজি পুরোদমে আসলে দাম কিছুটা কমবে।’

মাছ-মাংসের দাম কেমন

চট্টগ্রামে কিছু মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে তেলাপিয়া, রুই, মৃগেল ও রুপচাঁদা মাছের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে চাপিলা কেজিপ্রতি ১৫০, কৈ ২৩০, পোয়া ২৪০, চইক্কে ১৬০, স্যালমন বা তাইল্যে ৬৫০, গ্রাস কার্প ২০০ কেজি এবং বিগহেড ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। এসব মাছ গত সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছিল।

তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি। রুই মাছ বিক্রি হয় আকারভেদে ২৬০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেশি।

মৃগেল মাছ বিক্রি হয় ২৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০ টাকা কেজি। রুপচাঁদা মাছ বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে অন্তত ৫০ টাকা বেশি।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে জাতভেদে মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকায়। সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি অন্তত ৫০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা।

অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও ছাগলের মাংসের দাম। নগরীর বিভিন্ন বাজারে বৃহস্পতিবার গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। একই দাম ছিল শুক্রবারও।

এ বিভাগের আরো খবর