বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।
সোমবার মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে পৃথক পৃথক সাক্ষাৎ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ রপ্তানি বহুমূখীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন। এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানাএনা হয়েছে। পাট ও চামড়াজাত পণ্যের পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল, বিশেষ করে এপিআই খাত, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, সি ফুড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, বাইসাইকেল, হিমায়িত খাদ্য ও কৃষিপণ্যে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গুণগতমান উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ট্রেড ও রেগুলেটোরি সংক্রান্ত বাধা দূর করে আমদানি ও রপ্তানি নীতি যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি এবং বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদান করছে।’
২১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘এ বছর মেলায় বাংলাদেশে অবস্থিত সকল মিশনের প্রধান এবং ট্রেড/কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের নিয়ে মেলা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।’
দেশে উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শনের সবচেয়ে বড় আসর এই মেলা উল্লেখ করে তিনি জানান, এখানে অনেক বিদেশি প্যাভেলিয়নও থাকে। মিশন কর্মকর্তাদের মেলা পরিদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যের ব্রান্ডিং করা সম্ভব হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
যে সকল পণ্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে সেসব পণ্য কন্ট্রাক্ট ম্যানু্ফ্যাকচারিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। অনেক দেশ সরকার নির্ধারিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।’
সাক্ষাতকালে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আগামী ২৬-২৯ ফেব্রুয়ারি আবুধাবিতে অনুষ্ঠিব্য ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজন আয়োজিত মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশসমূহের অবস্থানের পক্ষে প্রয়োজনীয় সমর্থনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার কামনা করেন।
এ সময় হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। বর্তমানে উভয় দেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। উন্নয়ন সহযোগিতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অংশীদারত্বের উপরও আমরা গুরুত্বারোপ করি।’
দক্ষ জনবল তৈরি করার লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ পেশাদার খাতে সার্টিফিকেশন ও অ্যাক্রিডিটেশন সমতায়নে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার।
এ ছাড়া, সারাহ কুক বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক বাধা দূরীকরণ, সেবা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্বের প্রয়োগ ও সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উদারীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যেসকল সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তা সত্যিই প্রসংশনীয় উল্লেখ করে ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিযোগের আগ্রহ প্রকাশ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।