নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলসে শ্রমিক-কর্মচারীদের উজ্জীবিত রাখতে তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মিলসের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা।
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শনিবার কারখানা পরিদর্শনে যান তিনি।
বৈঠকে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলসের শ্রমিক-কর্মচারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এ কারখানা কখনো বন্ধ হবে না। বরং এটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি শুধু আমার নয়, আপনাদেরও সম্পদ। এটিকে হেফাজত করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
এ সময় তিনি শ্রমিকদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার আশ্বাস দেন ও তাদের যে কোনো সমস্যা জেনে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
মিলসের চেয়্যারম্যান বলেন, ‘আমি একটি অভিযোগ বক্স তৈরি করতে বলছি। আপনাদের কোনো অভিযোগ থাকলে সেখানে অভিযোগ জমা দেবেন। আমি বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন, তা আমার কাছে পৌঁছে যাবে।’
চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শ্রমিকরা কারখানার উৎপাদন বাড়ানো ও এটিকে আগলে রাখার আশ্বাস দেন।
এরপর তিনি কারখানা প্রাঙ্গনে একটি গাছের চারা রোপন করেন ও শ্রমিকদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে দুপুরের খাবার খান।
শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গে দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস ও দেশবন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘শ্রমিকরা যে কোনো কারখানার প্রাণ। তাদের সাথে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ থাকা দরকার। আমি বন্ধুর মত তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, তারা যদি মনে করেন, মালিকরা তাদের সঙ্গে আছেন, তাহলে তারা উজ্জ্বীবিত হন, তাদের উৎপাদনশীলতা বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন একটা অস্থির সময় পার করছি। এ সময়ে নানা সুযোগসন্ধানী গ্রুপ নানা অপকর্মের মাধ্যমে ক্ষতির চেষ্টা করতে পারে। মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ ও ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকলে তারা কোনো ক্ষতি করার সুযোগ পাবে না। তাই সব মালিকেরই উচিত শ্রমিকদের কাছে যাওয়া, তাদের আশ্বস্ত করা; তাদেরকে বলা, কারখানার ভাল-মন্দের সঙ্গে শুধু মালিকের সম্পর্ক নেই, শ্রমিকদেরও সম্পর্ক আছে। কারখানা ভাল চললে তারাও ভাল থাকবেন।’
দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলসের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার কারখানা পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির পরিচালক মইনুল হাসান লাল, নির্বাহী পরিচালক হাসান ইমাম তুহিন, মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ মোসাব্বির হোসেন, মহাব্যবস্থাপক শহীদুজ্জামান, মহাব্যবস্থাপক ওহীদুল হক রুবেল, হেড অব ওয়াশিং অজান্তা ডি সিলভা।
দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি একটি সমন্বিত ওভেন পোশাক কারখানা। এর রয়েছে ওয়েভিং, কাটিং, ওয়াশিং ও ফিনিশিং ইউনিট। এ কারখানায় প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কর্মরত, যার বড় অংশই সৈয়দপুর-নীলফামারী অঞ্চলের।
স্থানীয় কর্মসংস্থানে কোম্পানিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া এ কারখানায় কিছু বিদেশি টেকনিশিয়ানও কর্মরত আছেন।
কারখানাটির মাসিক উৎপাদনক্ষমতা ১৫ লাখ পিস পোশাক। কারখানাটিতে পুরুষ, নারী ও শিশু-কিশোরদের পোশাক তৈরি করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো বিখ্যাত পোশাক ব্র্যান্ড এ কারখানার ক্রেতা। এর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রায় সব মানসনদ।