আবেদনকারী যদি প্রকৃত পাওনাদার হন, আর সেটি যদি যথাযথভাবে প্রমাণিত হয় তবে কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর বিধান অনুযায়ী আবেদনকারী তার পাওনা পেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অবসায়ন ও পাওনা অর্থ ফেরতে পক্ষভুক্ত হতে দায়ের করা আবেদন খারিজ করে এ মন্তব্য করেছেন বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ইভ্যালির এক গ্রাহকের পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন খারিজ করে হাইকোর্ট বলেছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির কোনো গ্রাহক যদি প্রকৃত পাওনাদার প্রমাণিত হন তাহলে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের অধীনে সেই পাওনা আদায়যোগ্য। তিনি পাওনা পেতে পারেন। তবে এই মুহূর্তে পাওনা ফেরত চেয়ে রিটে কোনো আবেদনকারীকে পক্ষভুক্ত করলে সেটি উন্মুক্ত হয়ে যাবে। এর ফলে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, যদি আবেদনকারীকে এই পক্ষভুক্তির সুযোগ দেয়া হয় তাহলে আরও যারা গ্রাহক আছেন তারাও আবেদন নিয়ে আসবেন। এতে সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যাবে, যা মূল রিট মামলার যথাযথ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
আদালত বলে, এটা স্পষ্ট যে আবেদনকারী যদি প্রকৃত পাওনাদার হন এবং যদি তা প্রমাণিত হয় তবে কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর বিধান অনুযায়ী আবেদনকারী তার পাওনা পেতে পারেন। তার দাবি আদায়যোগ্য হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে পাওনা চেয়ে আবেদন বিবেচনাযোগ্য নয়।
চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এ সংক্রান্ত আবেদন করা হয়। আদালত ২৩ জুলাই তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর লিখিত আদেশের খারিজের কারণ উল্লেখ করে আদালত এসব কথা বলেছে।
আদালত রিট মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম ও ব্যারিস্টার মাহসিব হোসেন।
আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পক্ষভুক্তির এ আবেদন আদালত অনেক আগেই খারিজ করে দিয়েছেন। এখন লিখিত আদেশের খারিজের কারণ উল্লেখ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আদালত মনে করেছেন, পক্ষভুক্তির এই আবেদন মঞ্জুর করলে ইভ্যালির যে হাজার হাজার গ্রাহক আছেন, তারাও আবেদন নিয়ে আসবেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির অবসায়ন চেয়ে করা আবেদনটি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে তা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। যে কারণে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।’
এখন মূল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হলে গ্রাহক তাদের পাওয়া পেতে পারেন বলেও মনে করেন তিনি।
ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) বোর্ড গঠন করে দেয় হাইকোর্ট। এরপর সেই বোর্ড ইভ্যালি পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বোর্ডে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও সদস্য করা হয় স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজকে। আর সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীরকে।