ইসরায়েলে ঢুকে ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের গত ৭ অক্টোবরের প্রাণঘাতী হামলার জবাবে উপত্যকায় অব্যাহত বোমাবর্ষণের পাশাপাশি দুই সপ্তাহ ধরে খাদ্য, পানি, জ্বালানির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রবেশ বন্ধ রাখে ইসরায়েল। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের প্রচেষ্টায় মিসরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে শনিবার ২০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করে গাজা উপত্যকায়, কিন্তু ২০ লাখের বেশি মানুষের জন্য অপ্রতুল ত্রাণের সেসব ট্রাকে খাদ্য, ওষুধ, পানি থাকলেও ছিল না জ্বালানি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি না থাকলে ইসরায়েলের হামলায় থাকা অবরুদ্ধ গাজাবাসী কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে, তা জানিয়েছে আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসর থেকে গাজায় ত্রাণের যেসব চালান যাবে, সেগুলোতে জ্বালানি থাকবে না বলে ফের জানায় ইসরায়েল। এটি অবরুদ্ধ উপত্যকার বাসিন্দা ও জরুরি সেবাদাতা সংস্থাগুলোর জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের জেনারেটরের জন্য দরকার জ্বালানি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পানি পেতে গাজার বাসিন্দাদের সাধারণত ট্যাংক ভরতে হয়। জ্বালানি ছাড়া ট্রাকে করে পানি পরিবহন কিংবা পানি উত্তোলন করতে পারবেন না তারা। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় গত রোববার গাজার সর্বশেষ চালু থাকা সমুদ্রের পানি লবণমুক্ত করার প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে যায়।
গাজার কিছু হাসপাতালে এরই মধ্যে সেবা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। স্বল্প জ্বালানি দিয়ে চলছে কয়েকটি হাসপাতাল। এসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বড় বড় বিভাগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জ্বালানি না থাকলে হাজারো রোগীর পাশাপাশি ইনকিউবেটরে থাকা নবজাতকরা তাৎক্ষণিক ঝুঁকিতে পড়বে।
গাজার চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অনেক রোগী, বিশেষত কিডনি ও ক্যানসারের রোগীরা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য
গাজায় জ্বালানি পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিয়োজিত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জুলিয়েট টুমা আল জাজিরাকে বলেন, গাজায় জ্বালানি আসা অতীব জরুরি।
তিনি বলেন, ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম সক্রিয় রাখার পাশাপাশি লোকজনের ট্যাপে পানি পৌঁছাতে জ্বালানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উপত্যকায় ত্রাণের ট্রাকে জ্বালানি না রাখার ফলে অসুস্থ ও আহত ব্যক্তিদের জীবন সংকটাপন্ন হবে।
বিবৃতিতে হাসপাতালে আহত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের প্রাণহানি রোধে জ্বালানি ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী গাজায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও গাজা সীমান্তবর্তী দেশ মিসরের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।