হুন্ডি ও রপ্তানির মাধ্যমে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান।
সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ইআরএফ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘নানা কারণে রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। রিজার্ভে এখনও কোনো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে এর চেয়ে কমে গেলে কিংবা কোনো কারণে রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেলে বিপদ হতে পারে।’
তিনি বলেন, অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় ভাল করেছে। তবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় আমরা ভাল করছি। এর কারণ বাংলাদেশ সবসময় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে তৎপর ছিল।’
দেশে আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আমি লিখেছিলাম- এক দেশ দুই অর্থনীতি। এখন দেশে অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও এর সুফল সবাই সম হারে পাচ্ছে না।’
এ ধরনের আয় বৈষম্য বজায় রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভাল অবস্থায় আছে। আমাদের বড় একটি রপ্তানি খাত রয়েছে। সে সঙ্গে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়, যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি।’
বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতির অবস্থান শক্তিশালী পর্যায়ে রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন তিনি।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘দেশে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। তবে তার মানে এই নয় যে, দেশে প্রবাসী আয় আসা বাস্তবে কমে গেছে। আনুষ্ঠানিক পথে না এসে অনানুষ্ঠানিক পথে আসছে প্রবাসী আয়, যার মূল মাধ্যম হুন্ডি। অর্থাৎ রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না হয়ে হুন্ডিতে জমা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেন, তাদের জন্য এটা সুবিধাজনক হয়েছে।’
বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নয়নে ভাল কাজ করেছে বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু সরকার ১৫ বছর পর এসেও কেন ভাড়াচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করছে, সেই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সরকারকে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’